সরকারের চাপ সত্ত্বেও ফ্রান্সে তেল-গ্যাস কর্মীদের ধর্মঘট অব্যাহত

পূর্ব ফ্রান্সের রাউফাচের টোটাল এনার্জিসের একটি পেট্রোল স্টেশনের সামনে ফরাসি ভাষায় ‘আউট অব সার্ভিস’ লেখা প্লাকার্ড। ৮ অক্টোবর, ২০২২। ছবি: এএফপি

ফ্রান্সের অনেক পাম্পে জ্বালানি গ্যাস ও তেলের মজুত প্রায় শূন্যের কোঠায় পৌঁছেছে। দেশটির শীর্ষ জ্বালানি প্রতিষ্ঠান টোটাল এনার্জিসের কর্মীরা টানা ৩ সপ্তাহ ধর্মঘট পালন করায় এই পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।

গতকাল সোমবার ফরাসি সংবাদ মাধ্যম ফ্রান্স২৪-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনার টেবিলে বসার চাপ থাকা সত্ত্বেও ধর্মঘট প্রত্যাহারের বিষয়ে এখনো উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই।

ধর্মঘটে ফ্রান্সের প্রায় ৩০ শতাংশ পাম্পে অন্তত জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে জ্বালানি পেতে যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। মূলত বেতন বাড়ানোর দাবিতে ধর্মঘট করছেন টোটাল এনার্জিসের কর্মীরা।

গত রোববার টোটাল এনার্জিস কর্তৃপক্ষ জানায়, কর্মীরা কাজে ফিরে এলে বেতন-ভাতা নিয়ে আলোচনায় বসতে রাজি আছেন। তবে, টোটাল এনার্জিসের শ্রমিক ইউনিয়ন সিজিটি এই প্রস্তাবকে 'ব্ল্যাকমেইল' বলে অভিহিত করে কাজে ফিরতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

তারা টোটাল এনার্জিসের প্রথম ত্রৈমাসিকে ১০ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার মুনাফার দিকে ইঙ্গিত করে চলতি বছরে ১০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে।

টোটাল এনার্জিসের ইউরোপীয় তেল পরিশোধনাগারের প্রধান জঁ-মার্ক ডুরান্ড বলেন, 'ফরাসি জনগণকে ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছে।'

গতকাল সোমবারও বেশ কিছু তেল পরিশোধনাগারে কাজ পুরোপুরি বন্ধ ছিল, যার মধ্যে উত্তরাঞ্চলের লা হাভরের কাছাকাছি অবস্থিত দেশটির সবচেয়ে বড় পরিশোধনাগারও অন্তর্ভুক্ত।

এসসো-একসনমোবিলের ফরাসি শাখার কর্মীরাও একই শ্রমিক ইউনিয়নের অংশ হিসেবে ধর্মঘটে অংশ নিচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্নসহ ফরাসি সরকারের সদস্যরা উভয়পক্ষকে দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যা নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছেন।

গতকাল দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেন, 'কাজ বন্ধ রেখে আলোচনার পথ সঠিক নয়।'

তিনি জানান, চলমান পেট্রোল সংকটের সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধের কোনো সম্পর্ক নেই এবং এতে সরকারেরও কোনো হাত নেই।

প্রধানমন্ত্রী বোর্ন জানান- তিনি আশা করছেন, 'এ সপ্তাহের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।'

এই জ্বালানি সংকট এমন এক সময় হয়েছে যখন জ্বালানির উচ্চমূল্য ও মূল্যস্ফীতির চাপে ফরাসি নাগরিকদের ক্রয়ক্ষমতা দ্রুত কমে আসছে।

বামপন্থী বিরোধী দল নিউপস গত রোববার প্যারিস ও ফ্রান্সের অন্যান্য জায়গায় 'জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে যাওয়ার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসূচির' ঘোষণা দিয়েছে।

এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জয়ী অ্যানি এখঁনো ও অন্যান্য প্রতিথযশা ফরাসি ব্যক্তিত্বরা এই উদ্যোগে সমর্থন জানিয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English

CA’s special aide questions IMF, World Bank role in 15 years of graft

Global lenders extended loans without questioning the environment before the July revolution, he says

1h ago