গৃহবধূ সামিনা হত্যা: ১৬ বছর পর গ্রেপ্তার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার ধামরাইয়ের আগুনে পুড়িয়ে গৃহবধূ সামিনা হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আ. রহিম ও রোকেয়াকে ১৬ বছর পলাতক থাকার পর চাঁদপুর জেলা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৪।

তাদের গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক ডিআইজি মোজাম্মেল হক।

র‌্যাব জানিয়েছে, গোপন সংবাদেরভিত্তিতে গত ২২ অগাস্ট র‌্যাব-৪ এর একটি অভিযান দল ঢাকা জেলার ধামরাইয়ের আগুনে পুড়িয়ে গৃহবধূ সামিনা হত্যা মামলায় দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে পলাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আ. রহিম (৬৪) এবং রোকেয়াকে (৫০) চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ থানাধীন নারায়ণপুর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনার বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০০৩ সালে সাভারের কাউন্দিয়ার বাসিন্দা সামিনার (১৮) সঙ্গে সাভারের বক্তারপুরের গ্রেপ্তার আসামি রোকেয়ার ছোট ভাই মামলার মূল আসামি জাফরের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় কন্যাপক্ষ নগদ টাকা পয়সা, আসবাবপত্র এবং ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী প্রদান করে। কিন্তু পরে স্বামী জাফর বিয়ের পর থেকে যৌতুকের টাকার জন্য গৃহবধূকে নানাভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। যৌতুকের ষোল হাজার টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও সামিনার দরিদ্র বাবা জুরা মিয়া ৬ হাজার টাকা জাফর ও তার পরিবারকে দেন। বাকি দশ হাজার টাকা পরে দিবে বলে জানায়।

র‌্যাব জানায়, কিন্তু ২০০৫ সালের ৭ জুন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সামিনাকে কৌশলে গ্রেপ্তার আসামি রোকেয়া ও আ. রহিমের ধামরাইয়ের সৈয়দপুর ভাড়া বাড়িতে স্বামী জাফর দাওয়াত করে নিয়ে আসে। সেখানে আ. রহিম, রোকেয়া, সামিনা ও তার স্বামী জাফরের উপস্থিতিতে কথাবার্তার একপর্যায়ে তারা সেই যৌতুকের বাকি টাকা দাবি করে। পরে স্বামী জাফর, আ. রহিম, রোকেয়া এবং অন্যান্য আসামিরা সামিনাকে মারধর করে একপর্যায়ে জাফর ঘরে থাকা দাহ্য জাতীয় পদার্থ সামিনার শরীরে ঢেলে দিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়।

র‌্যাবের তথ্য অনুযায়ী, সামিনার চিৎকারে আশেপাশের মানুষ এসে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে নয়ারহাট গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ভর্তি করান এবং সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০০৫ সালের ১০ জুন তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে তিনি আসামিতদের নাম উল্লেখ করে মৃত্যুকালীন জবানবন্দি দেন।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানায়, এ ঘটনায় সামিনার স্বামী জাফর, জাফরের ভগ্নীপতি আবদুর রহিম, বোন রোকেয়াসহ ৬ জনকে আসামি করা হয়। ২০১৮ সালে এই ৩ জনসহ ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় জাফর কারাগারে থাকলেও রহিম ও তার স্ত্রী রোকেয়া পলাতক ছিলেন। তারা দু'জন ঘটনার পর গ্রেপ্তার হলেও ২০০৬ সালের শেষের দিকে জামিনে মুক্তি পেয়ে আত্মগোপনে ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Jatrabari turns into battlefield as students clash

Students of three colleges clashed at Dhaka's Jatrabari today, turning the area into a battlefield

29m ago