ওসমানী মেডিকেল কলেজের আন্দোলন স্থগিত
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও শিক্ষানবিশ চিকিৎসক হয়রানির প্রতিবাদে চলমান আন্দোলন আগামী ৭ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র ও মেডিকেল কলেজটির ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মতিউর রহমান আগামী ৭ দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, 'শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও আন্দোলন স্থগিত করে ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরছেন।'
এদিকে আজ ভোররাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর শাহপরাণ এলাকা থেকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি দিব্য সরকারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণার পর শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা কর্মবিরতি ভেঙে কাজে যোগ দেওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসা সেবায় সৃষ্ট অচলাবস্থা ও রোগীদের ভোগান্তির সাময়িক অবসান হয়েছে।
এর আগে আজ সকালে আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনায় বসে হাসপাতাল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ। এতে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারাও অংশ নেন।
বৈঠক শেষে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. আব্দুল মোন্তাকিম চৌধুরী উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, 'মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে এবং ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বাড়াতে দ্রুততম সময়ে কার্যক্রম গ্রহণের আশ্বাস পেয়েছি। এর ভিত্তিতে আমরা আন্দোলন স্থগিত করছি। তবে ৭ দিনের মধ্যে সব আসামি গ্রেপ্তার না হলে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে পদক্ষেপ না নেওয়া হলে আবার আন্দোলন শুরু হবে।'
গত রোববার হাসপাতালের এক নারী শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে এক রোগীর ২ স্বজনকে পুলিশে দেওয়া হয়। এ ঘটনার জেরে সোমবার রাত ৮টার দিকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালালে রুদ্র নাথ ও নাইমুর রহমান ইমন নামে দুই শিক্ষার্থী আহত হন।
এর প্রতিবাদে সোমবার রাত ১০টা থেকে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরাও কর্মবিরতি ঘোষণা করে আন্দোলনে যোগ দেন। রাত ১টার দিকে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়াকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
হাসপাতালে ও কলেজ কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা রাত ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে আন্দোলন সাময়িক স্থগিত করে। তবে পরদিন বিকেল পর্যন্ত তাদের দাবি অনুযায়ী হামলা ও হয়রানির ঘটনায় জড়িত মূল ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার না করায় মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে আবারও বিক্ষোভ কর্মসূচি ও কর্মবিরতি শুরু করেন।
হামলা ও হয়রানির ঘটনায় কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার ২টি পৃথক মামলা দায়ের করে।
শিক্ষানবিশ চিকিৎসক হয়রানির ঘটনায় হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ হানিফের দায়ের করা মামলায় মো. আব্দুল্লাহ নামের একজনের নাম উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি আসামি করা হয় আরও ৩-৪ জনকে।
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় কলেজের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রশীদের দায়ের করা মামলায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন—দিব্য সরকার, মো. আব্দুল্লাহ, এহসান, মামুন, সাজন, সুজন ও সামি।
এই ঘটনায় সোমবার রাতে পুলিশ মোহিদ হাসান রাব্বি ও এহসান আহমেদ নামে ২ জনকে আটক করে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
Comments