জিম্বাবুয়ের কাছেও টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারল বাংলাদেশ

জিম্বাবুয়ের কাছে কুপোকাত বাংলাদেশ। ছবি- এএফপি

সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে শুরুতেই জিম্বাবুয়েকে চেপে ধরে ম্যাচ নিজেদের দিকে নিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ভীষণ চাপে পাল্টা ঝড় তুলে স্বাগতিকদের খেলায় ফেরান রায়ান বার্ল আর লুক জঙ্গুই। জিম্বাবুয়ে জুতসই পুঁজি পাওয়ার পর তালগোল পাকানো ব্যাটিংয়ে দ্রুত রান আনতে না পারার ব্যর্থতায় ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ।

হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে বাংলাদেশকে ১০ রানে হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে। আগে ব্যাট করে তাদের করা ১৫৬ রানের জবাবে ১৪৬ পর্যন্ত করতে পারে সফরকারীরা। এতে তিন ম্যাচ সিরিজ তারা নিশ্চিত করল ২-১ ব্যবধানে। টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম বাংলাদেশের বিপক্ষে কোন সিরিজ জিতল জিম্বাবুয়ে।

আর কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে ভাষা খুঁজে হয়রান বাংলাদেশ দেখল আরেকটি ব্যর্থতা। এদিন রান তাড়ায় শুরুতে ঝড়ের আভাস দিয়ে লিটন দাস নিভে যাওয়ার পর খেই হারায় দলের ইনিংস। আফিফ হোসেন শেষ পর্যন্ত টিকে ২৭ বলে ৩৯ করলেও দলকে জেতাতে পারেননি।

নাটকীয়ভাবে দলে ফেরা অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মাঝের ওভারে খেলেন ২৭ বলে ২৭ রানের মন্থর ইনিংস।

অথচ শুরুটা ছিল অন্যরকম 

টস জিতে ব্যাট করতে যাওয়া জিম্বাবুয়ের ডানা শুরুতেই ভেঙে ফেলেছিল বাংলাদেশ। ক্রেইগ আরভিন, রেজিস চাকাভারা নেমে দ্রুত রান আনতে থাকলেও উইকেট পেতে দেরি হয়নি। পাওয়ার প্লের মধ্যেই আসে ৩ উইকেট। ১৩তম ওভারে কেবল ৬৭ রানে জিম্বাবুয়ের ৬ উইকেট ফেলে দিয়েছিল মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের দল।

তখন তিন অঙ্ক যাওয়া নিয়েই শঙ্কায় থাকা সফরকারীদের আর চাপ বাড়ানো যায়নি।

বার্ল-জঙ্গুইর ৪ ওভারের তাণ্ডব

১৫ থেকে ১৮। এই চার ওভারই হয়ে গেল ম্যাচের মোড় ঘোরানো। ১৫তম ওভারে নাসুম আহমেদকে ছক্কার বৃষ্টিতে নাজেহাল করে ফেলেন বার্ল। ৫ ছক্কা আর এক চারে ওই ওভারে আসে ৩৪ রান। জঙ্গুই তাল মিলালে পরের ৩ ওভার থেকে আসে আরও ৩৬। এই দুজন আউট হয়ে যাওয়ায় শেষ দুই ওভারে আসে কেবল ১০ রান। তাতে কি জিম্বাবুয়ের জুতসই রান পেয়ে যাওয়া আর আটকানো তো যায়নি।

বার্ল ২৮ বলে করেন ৫৪, জঙ্গুই ২০ বলে ৩৫।

রান তাড়ায় দিশাহীন ব্যাটিং

১৫৭ রান তাড়ায় সাবলীল শুরুর আভাস দিয়েছিলেন লিটন দাস। প্রথম ওভারে এক চারে ৯ রান আনার পর দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেও পেয়ে গিয়েছিলেন বাউন্ডারি। কিন্তু ভিক্টর নিয়াউচির পরের বলেই বোলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরত যান ছন্দে থাকা ব্যাটার।

নিজের পরের ওভারে অভিষিক্ত ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনকেও তুলে নেন নিয়াউচি। একদম আলতো শটে মিড অনে ধরা দিয়ে থামে তার ৬ বলে ২ রানের ইনিংস।

এদিনও ক্রিজে এসে বাউন্ডারি পেয়ে গিয়েছিলেন এনামুল হক বিজয়। কিন্তু পাওয়ার প্লে পুরোটা পার করতে পারেননি তিনি। ওয়েসলি মাধভেরের নিচু হওয়া বলে বোল্ড হয়ে যান ১৪ রান করে।

এরপর মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে প্রতিরোধের চেষ্টায় নামেন নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু থিতু হতেই সময়টা বেশি লেগে যায় তার। এই জুটি ২৬ রান আনতে খেলে ফেলে ২৮ বল।

উইকেটে হাঁসফাঁস করতে থাকা শান্ত শন উইলিয়ামসের বলে স্কুপ করতে গিয়ে তুলে দেন সহজ ক্যাচ। ২০ বলে করেন কেবল ১৬ তান।

দলের চরম বিপদে কাণ্ডারি হতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। বরং থিতু হতে অনেকটা সময় নিয়ে দলের বিপদ বাড়ান তিনি। আফিফ হোসেনের সঙ্গে জুটিতে ৩৯ আসে ৩০ বলে। মাহমুদউল্লাহর তাতে অবদান ১৬ বলে ১৮।

ওভারপ্রতি রান তোলার চাহিদা যখন দশের ঘরে। তখন জায়গা বের করে মারতে গিয়েই কাবু হন তিনি। ব্রেড ইভান্সের বল উড়াতে গিয়ে ধরা দেন কিপারের গ্লাভসে। ২৭ বল খেলে ২৭ রান করেন বাংলাদেশের সাবেক টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক।

শেষের সুযোগ

ম্যাচ জেতার সুযোগ এসেছিল শেষ দিকে। শেষ ৩ ওভারে দরকার ছিল ৩৭ রান। কিন্তু শেখ মেহেদী হাসান ও আফিফ হোসেনের পক্ষে এই সমীকরণ মেলানো সম্ভব হয়নি। ১৯তম ওভারে মেহেদী ফেরেন ১৯ বলে ২২ করে। ২৭ বলে ৩ চারে আফিফ ৩৯ করে অপরাজিত থাকলেও লাভ হয়নি।

Comments

The Daily Star  | English

Joy in the wild: Families flock to National Zoo for Eid fun

On the second day of Eid, the National Zoo in Dhaka turned into a vibrant celebration of life, laughter, and togetherness

36m ago