সাকিব-রাজ্জাককে ছাড়িয়ে যাওয়া তাইজুল ছিলেন সুযোগের অপেক্ষায়
২৮ মাস পর ওয়ানডে খেলতে নেমে বাজিমাত করলেন তাইজুল ইসলাম। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করায় সামনে থেকে ভূমিকা রেখে এই বাঁহাতি স্পিনার এই সংস্করণে প্রথমবারের মতো নিলেন ৫ উইকেটের স্বাদ। তাতে সাকিব আল হাসান ও আব্দুর রাজ্জাককে টপকে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের স্পিনারদের মধ্যে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড গড়লেন তিনি। ম্যাচসেরার পুরস্কার বগলদাবা করার পর তাইজুল জানালেন, সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি।
গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে শনিবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ৪ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। ফলে তিন ম্যাচের সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে স্বাগতিক ক্যারিবিয়ানরা। তাদেরকে ১৭৮ রানে বেঁধে ফেলে টাইগারদের জয়ের মঞ্চ প্রস্তুত করতে তাইজুল নেন ৫ উইকেট। স্পিনবান্ধব উইকেটে ১০ ওভার হাত ঘুরিয়ে ২ মেডেনসহ মাত্র ২৮ রান খরচ করেন তিনি। ১০ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে তার আগের সেরা বোলিং ফিগার ছিল অভিষেক ম্যাচে। ২০১৪ সালে মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১১ রানে তিনি পেয়েছিলেন ৪ উইকেট।
ওয়েস্ট ইন্ডিজে সদ্যসমাপ্ত সফরের শুরু থেকে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে থাকলেও একাদশে জায়গা মিলছিল না তাইজুলের। সাকিব আল হাসান দলে থাকায় টেস্ট সিরিজে তাকে থাকতে হয় দর্শক হয়ে। আর ওয়ানডে সিরিজের স্কোয়াডে শুরুতে তার নামই ছিল না। তবে সাকিব সরে দাঁড়ানোয় ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে থেকে যান তিনি। অবশেষে সফরের শেষ ম্যাচে একাদশে ঠাঁই হয় তার। বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামের বদলে জায়গা পেয়ে সব আলো কেড়ে নেন তিনি।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশের কোনো স্পিনারের আগের সেরা বোলিং ফিগার ছিল ২৯ রানে ৫ উইকেট। এই কীর্তি যৌথভাবে ছিল বাঁহাতি অলরাউন্ডার সাকিব ও সাবেক তারকা রাজ্জাকের দখলে। তাইজুল তাদের ছাড়িয়ে পৌঁছে গেলেন চূড়ায়।
ওয়ানডে দলে অনিয়মিত হলেও এই সংস্করণে বাংলাদেশের রেকর্ডের পাতায় এখন জ্বলজ্বল করছে তাইজুলের নাম। ম্যাচের পর তিনি জানান, সুযোগ পেলে ভালো করার প্রত্যাশায় ছিলেন, '৫ উইকেট পাওয়াটা অনেক ভাগ্যের ব্যাপার। আমি খেলছিলাম না, এটা বড় কিছু নয়। সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। চাওয়া ছিল সুযোগ পেলে যেন ভালো করব।'
নিজের প্রথম বলেই উইকেটের দেখা পান তাইজুল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপেনার ব্র্যান্ডন কিং তার ফ্লাইটে পরাস্ত হয়ে স্টাম্প হারান। এরপর একে একে তাইজুল শিকার করেন শেই হোপ, রভম্যান পাওয়েল, কিমো পল ও প্রতিপক্ষ অধিনায়ক নিকোলাস পুরানকে। উইকেটের ভাষা বুঝে বল করে সফল হওয়ার কথা জানান তিনি, 'আমার কাজটা আমি করার চেষ্টা করেছি। উইকেটে সহায়তা ছিল, আমার কাজ ছিল ঠিক জায়গা বল করা। আমি উইকেট অনুযায়ীই বল করার চেষ্টা করেছি।'
তাইজুলের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের প্রশংসায় বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালও হন পঞ্চমুখ, 'তাইজুলের নাম বলতেই হবে। সফরজুড়ে সে দলের সঙ্গে ছিল, ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়নি। প্রতিটি অনুশীলন সেশনে সে ছিল। অবশেষে সে যখন আজকে (শনিবার) খেলার সুযোগ পেল, নিজেকে মেলে ধরল।'
Comments