নড়াইলে বর্বরতায় দায়ীদের শক্ত হাতে দমন চাই, ২১ নাগরিকের বিবৃতি

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া সাহাপাড়ায় শুক্রবার হিন্দুদের বাড়ি, দোকান ও মন্দিরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ছবি: সংগৃহীত

নড়াইলে কলেজ অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত এবং ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হিন্দুদের বাড়ি ও মন্দিরে হামলার ঘটনা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয় জানিয়ে কঠোর হস্তে সাম্প্রদায়িক সংকট মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের ২১ নাগরিক।

আজ শনিবার এক বিবৃতিতে তারা এই আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, 'মাত্র মাসাধিককালের  ব্যবধানে  নড়াইলে  সংগঠিত  দুটি  সাম্প্রদায়িক  সহিংসতার  ঘটনা  প্রমাণ  করে বাংলাদেশের সমাজের অভ্যন্তরে সাম্প্রদায়িক পশুশক্তির উত্থান ঘটছে। চোখ বুঁজে থাকলে প্রলয় বন্ধ হয় না।'

বিবৃতিদাতারা বলেন, 'নড়াইলে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্য কলেজ অধ্যক্ষকে জুতোর মালা পরিয়ে থানায় নিয়ে যাওয়ার ন্যাক্কারজনক ঘটনা মোকাবিলায় পুলিশ ও প্রশাসনের ব্যর্থতা আমাদের বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন করেছিল। দুদিন আগে ধর্ম-অবমাননার অজুহাতে আরও নারকীয় ঘটনা সংঘটিত হলো। একই ধরনের অজুহাত, ইসলামের মহানবী সম্পর্কে অপমানসূচক ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বসত বাড়িতে অগ্নি-সংযোগ ও লুণ্ঠন একথা প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশ তার অসাম্প্রদায়িক চরিত্র ক্রমশ হারিয়ে ফেলছে। ঘটনাগুলোকে তুচ্ছজ্ঞান করা বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে করার কোনো কারণ নেই। 

২০১২  সাল  থেকে  রামু-নাসিরনগর-অভনগর-শাল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-কুমিল্লা-চৌমহনী-মুন্সিগঞ্জ-নড়াইল-উত্তরাসহ সারাদেশে ধারাবাহিকভাবে যেসব সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনা ঘটেছে তা বাংলাদেশকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়শূন্য  কেবল  মুসলিম  অধ্যুষিত  ধর্মান্ধ  দেশে  পরিণত  করার মহাপরিকল্পনার  অংশ  বই  আর  কিছু  নয়।  অসাম্প্রদায়িকতার  সমর্থক  রাজনৈতিক  দলের  অভ্যন্তরে সাম্প্রদায়িক অনুপ্রবেশকারীদের আধিক্য এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, এই রাজনৈতিক দল সাম্প্রদায়ির হামলার প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ করতে উপর্যুপরি ব্যর্থ হচ্ছে। প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্ব নিজস্ব

দায়বোধ থেকে এই  ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করা তো দূরের  কথা,  এর সমালোচনা করার সক্ষমতা হারিয়েছে।'

'আমরা সরকারকে তার দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলতে চাই, কঠোর হস্তে এই সাম্প্রদায়িক সংকট মোকাবিলায় অবিলম্বে সচেষ্ট হন। অন্যথায় এই অপশক্তির আধিপত্যে সমাজ হাতছাড়া হতে বাধ্য এবং তাতে করে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।'

বিবৃতিদাতারা হলেন--সৈয়দ হাসান ইমাম,  অনুপম সেন, রামেন্দু মজুমদার, সেলিনা হোসেন, সারোওয়ার আলী, ফেরদৌসী মজুমদার, আবেদ খান, আবদুস সেলিম, লায়লা হাসান, মফিদুল হক, মামুনুর রশীদ, শফি আহমেদ, শাহরিয়ার কবীর, মুনতাসির মামুন, হারুন হাবীব, ম, হামিদ, গোলাম কুদ্দুছ, শিমূল ইউসুফ, সারা যাকের, লুৎফর রহমানও নাসির উদ্দীন ইউসুফ।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus begins meeting political leaders to discuss pressing issues

Yunus is scheduled to hold another meeting with leaders of different Islamist parties after this

38m ago