‘এ রকম নিরানন্দের ঈদ কখনো দেখিনি’

zamiran_lalmonirhat.jpg
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ইটাপোতা গ্রামের বাসিন্দা জমিরন নেছা। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

জমিরন নেছার বয়স আনুমানিক ৯০ বছর। ধরলার ভাঙনে বসত ভিটা-আবাদি জমি হারিয়ে তিনি বাস করছেন অন্যের আশ্রয়ে। করোনা অতিমারি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির পর নতুন ক্ষত রেখে গেছে বন্যা। ঈদ এলেও আনন্দ আসেনি তার ঘরে। অতি দরিদ্রদের সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী কার্যক্রম ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিএফ) কর্মসূচি থেকে চাল পেলেও তরকারির সংস্থান হয়নি।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ইটাপোতা গ্রামে ধরলা নদীর পাড়ে অন্যের জমিতে জরাজীর্ণ টিনের ঘরে প্রায় ১ দশক যাবৎ একাই থাকেন জমিরন। স্বামী দারোগ আলী গত হয়েছেন ২ যুগ আগে। ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে যার যার নিজের সংসারে ব্যস্ত। পাশেই ছিল তার বসত ভিটা। সরকারি সহায়তা তার জীবিকার একমাত্র অবলম্বন। বয়স্কভাতা বাবদ প্রতি মাসে তিনি ৫০০ টাকা পান।

আজ রোববার জমিরন নেছা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ভিজিএফের ১০ কেজি চাল পেয়েছি কিন্তু তরকারির ব্যবস্থা করতে পারিনি। আলু ভর্তা দিয়ে ভাত খেয়েছি।

জমিরন বলেন, জীবনে বহু ঈদ দেখেছি কিন্তু এ রকম নিরানন্দের ঈদ কখনো দেখিনি।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্রের পোড়ার চরের বাসিন্দা মিনহাজ উদ্দিনের ৩টির মধ্যে দুটি ঘর। অশীতিপর মা, স্ত্রী, ২ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে তার সংসার। ঈদে ১ পোয়া মাংসও জোটেনি মিনহাজের।

sonavan_kurigram.jpg
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্রের পোড়ার চরের বাসিন্দা সোনাভান বেওয়া। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

সোনাভান বেওয়া বলেন, নিজের জন্য না, নাতি-নাতনিদের জন্য কষ্ট হচ্ছে। ভিজিএফের ১০ কেজি চাল পেয়েছি কিন্তু তরকারি বলতে রয়েছে শুধু ডাল।

মিনহাজ ডেইলি স্টারকে বলেন, কিছু টাকা সংগ্রহ করেছি, সেই টাকায় ঘর মেরামত করতে হবে। ঈদে খরচ করলে ঘর মেরামত করানো সম্ভব হবে না। এলাকায় ঈদের আনন্দ আছে কিন্তু আমাদের মনে কোনো আনন্দ নেই।

বন্যায় কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও গঙ্গাধর নদীর তীরবর্তী ৩ লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অনেকে হয়েছেন বাস্তুহারা।

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কেউ এবার কোরবানি দিতে পারেননি। এই মানুষগুলোর ঘুরে দাঁড়াতে সময় লাগবে। এ বছর বানভাসীদের ঈদুল আজহা কাটছে নিরানন্দে।

Comments

The Daily Star  | English

Grim discovery: Five bodies found on vessel in Meghna

The incident had occurred on the Meghna river under Chandpur Sadar upazila in an area adjacent to Shariatpur

1h ago