ত্রাণের আশায়

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হাকালুকি হাওরপাড়ের ভুকশিমইলে ত্রাণপ্রত্যাশী মানুষ। ৭ জুলাই ২০২২। ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা/স্টার

হাকালুকি উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৩ সপ্তাহ ধরে পরিবার নিয়ে আছেন তাজুল মিয়া। তিনি মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার মুর্শিদাবাদপুর গ্রামের বাসিন্দা।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ৩ সপ্তাহে মাত্র ৩ দিন ত্রাণ পেয়েছি। প্রথম দিন পেয়েছিলাম চাল-আলু-ডাল, দ্বিতীয় দিন পেয়েছিলাম চিড়ামুড়ি ও মোমবাতি এবং তৃতীয় দিন পেয়েছিলাম খিচুড়ি। এরপর আর কিছুই পায়নি।'

বন্যার কারণে ঈদে বাড়ি ফিরতে পারছেন না বলেও জানান তিনি।

আশ্রয়কেন্দ্রের আরেক বাসিন্দা রেজিয়া বেগমও একই কথা বলেন। তিনি বলেন, 'বানের পানিতে আমাদের হাড়ি-পাতিল, লেপ-তোষক, চাল-ডাল সব ভেসে গেছে। বাড়িতে ফিরতে মন চায়। কিন্তু, ঈদের আগে বাড়িতে ফিরতে পারবো কিনা চিন্তায় আছি।'

শুধু তারাই নন এই আশ্রয়কেন্দ্রে ৪৫ পরিবারের সবারই একই কথা।

ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা/স্টার

ধীর গতিতে হাকালুকি হাওরের পানি কমছে। আবার একটু বৃষ্টি হলেই বেড়ে যাচ্ছে পানি। তাই আশ্রয়কেন্দ্র থেকে তারা বাড়িতে ফিরতে পারছেন না। হাওরপাড়ের চলছে ত্রাণের জন্য হাহাকার। ত্রাণ বিতরণের সংবাদ পেলেই মানুষ ভিড় করছেন।

বড়লেখা উপজেলার হাকালুকি হাওরপাড়ের তালিমপুর ইউনিয়ন ও কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার, বরমচাল ও ভুকশিমইল ইউনিয়ন ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।

ব্রাাহ্মণবাজার ইউনিয়নের শ্রীপুর কামিল মাদরাসা আশ্রয়কেন্দ্রে ৩১ পরিবার গত ১৪ দিন ধরে  অবস্থান করছে। তারা সেই ইউনিয়নের শ্রীপুর কটিরপার এলাকার বাসিন্দা।

একই এলাকার বাসিন্দা ও সমাজসেবক খসরু উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরকারি ত্রাণ অপ্রতুল। বিক্ষিপ্তভাবে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। এটা যদি একটা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেওয়া যেত তাহলে ত্রাণ নিয়ে এতটা হাহাকার থাকতো না।'

তিনি আরও জানান, এই ইউনিয়নের আলী নগর, পশ্চিম আলী নগর, মাধবপুর ও লামামাধবপুর বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ।

ভুকশিমইল ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, এখনো অন্তত ৬০ ভাগ মানুষের উঠানে পানি। যাদের ঘর থেকে পানি নেমেছে, ঘর না শুকানোয় তারাও ফিরতে পারছেন না।

কালেশার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র আছে ১১ পরিবার। তাদেরকে কেউ কেউ ত্রাণ হিসেবে রান্না করা খাবার দিচ্ছেন। তবে তা অপ্রতুল।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সরকারি বরাদ্দ হিসেবে এ পর্যন্ত মৌলভীবাজার জেলায় মোট ৮০৫ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৭০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, ৩০ হাজার ২১২ প্যাকেট দুধ ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
Reforms vs election

Reforms vs election: A distracting debate

Those who place the election above reforms undervalue the vital need for the latter.

10h ago