নাইকো দুর্নীতি মামলার শুনানি ২ আগস্ট পর্যন্ত মুলতবি
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার শুনানি ২ আগস্ট পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান এ আদেশ দেন। এদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি মুলতবি চেয়ে আদালতে করা আবেদন করা হয়।
তার আইনজীবী জয়নাল আবেদীন মেসবাহ দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়, খালেদা জিয়া অসুস্থ। সম্প্রতি হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। বর্তমানে তিনি বাসায় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসরণ করছেন।
আদালত খালেদা জিয়ার সশরীরে উপস্থিতি মওকুফ করায় মেসবাহ তার পক্ষে শুনানি করেন। আদালতকে তিনি আরও জানান, অসুস্থতার কারণে সিনিয়র আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। আগামী তারিখেও তিনি শুনানি করবেন।
আদালতের তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন কারণে আসামিপক্ষ এ নিয়ে নাইকো দুর্নীতি মামলার শুনানির তারিখ ৪৪ বার পেছালো।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাগারে থাকার পর গত বছরের ২৫ মার্চ বিএনপি চেয়ারপারসন সরকারের নির্বাহী আদেশে কারাগার থেকে মুক্তি পান। ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ৪০১(১) ধারা অনুযায়ী খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড স্থগিত করা হয়।
সিআরপিসির ৪০১(১) ধারায় বলা হয়েছে, 'যখন কোনো ব্যক্তিকে অপরাধের জন্য শাস্তি প্রদান করা হয়, তখন সরকার যে কোনো সময় শর্ত ছাড়াই অথবা শর্তের বিনিময়ে (দণ্ডিত ব্যক্তি গ্রহণ করে) শাস্তি কার্যকর স্থগিত করতে পারে। অথবা তাকে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তার পুরো বা যে কোনো অংশ স্থগিত করতে পারে।'
পরবর্তীতে খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়।
২০০৭ সালে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করে দুদক। দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেছিলেন। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দুদক আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
এরা হলেন—বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ এইচ সেলিম ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
এ কে এম মোশাররফ হোসেন ২০২০ সালের ১৭ অক্টোবর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ গত বছরের ১৬ মার্চ মারা গেছেন।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে সরকারে থাকাকালে খালেদা জিয়াসহ বেশ কয়েকজন ক্ষমতা অপব্যবহার করে কানাডার কোম্পানিটিকে অবৈধভাবে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের সুবিধা সুবিধা পাইয়ে দেয়। অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।
আসামিদের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন আল মামুন বর্তমানে কারাগারে আছেন। বাকি ৬ জন বর্তমানে জামিনে আছেন। আরেক আসামি কাশেম শরীফ বর্তমানে পলাতক।
এদিন শুনানির সময় মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আরেক আসামি সেলিম করোনায় আক্রান্ত।
Comments