শিক্ষক হত্যা: প্রাথমিক ও হাইস্কুল শাখার অনুমোদন নেই ইউনুছ আলী কলেজের

হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ছবি: স্টার/ফাইল ছবি

ঢাকার আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকার হাজী ইউনুছ আলী কলেজের মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শাখা পরিচালনার অনুমোদন নেই বলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন।

এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে একই প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম ওরফে জিতু (১৯)।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হাজী ইউনুছ আলী কলেজ পরিদর্শন করেন অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন।

পরিদর্শন শেষে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করেছি। প্রতিষ্ঠানটিতে শিশু শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হয়। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর একাডেমিক স্বীকৃতি বোর্ড থেকে নেওয়া আছে। কিন্তু ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদানের অনুমতি তাদের নেই।'

'প্রাথমিক শাখার একটা অনুমতি আছে বলে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ দাবি করেছেন এবং একটি কোড নম্বরও আমাদের দেখিয়েছেন। কিন্তু এর সাপোর্টিংয়ে তারা কোনো অথেনটিক কাগজপত্র বা অফিসিয়াল চিঠিপত্র আমাদের দেখাতে পারেননি। কাজেই প্রাথমিক শাখার অনুমোদন নেই,' বলেন তিনি।

'আমরা বিষয়টি বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানাব,' যোগ করেন তিনি।

অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন বলেন, 'বোর্ডের অনুমোদন না নিয়ে প্রতিষ্ঠান চললে সে সব প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলার অভাব থাকে। আর এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।'

প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিবেচনা করবেন। আমরা প্রাথমিকভাবে তাদের অনুমোদন নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করতে অধ্যক্ষকে বলে এসেছি।'

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাজী ইউনুছ আলী কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান উচ্চ মাধ্যমিক শাখার অনুমোদন না থাকার বিষয়টি স্বীকার করে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রাইমারির সেকশনের বিষয়টি অনুমোদিত। এর ইএমএস নম্বরও দিয়েছি। ওই নম্বরে অনলাইনে বিস্তারিত পাওয়া যাবে।'

মাধ্যমিক শাখার বিষয়ে তিনি বলেন, 'এই এলাকায় স্কুলগুলো এভাবেই পরিচালিত হয়। অন্য কোনো একটা স্কুলের মাধ্যমে নিবন্ধন করা হয়। এখানে পাঠদান করা হলেও পরীক্ষার সময় কেন্দ্রটা আমরা চেঞ্জ করি।'

'যেহেতু আমাদের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত আমাদের অনুমোদন নেই, তারা বলেছেন যে এটা চালাচ্ছেন কেন? আমরা বলেছি, যেহেতু আমাদের এখানে ৫০ জনের মতো তরুণ শিক্ষক আছেন। শুধু কলেজ চালিয়ে তাদের বেতন দেওয়া সম্ভব নয়। তাই আমরা হাইস্কুল পরিচালনা করছি,' বলেন তিনি।

তিনি জানান, প্রায় ১৩ বছর আগে প্রতিষ্ঠানটি চালুর সময় থেকেই হাইস্কুল ও প্রাথমিক শাখা চালু করা হয়।

গত শনিবার হাজী ইউনুছ আলী কলেজ প্রাঙ্গণে মেয়েদের ক্রিকেট খেলার সময় দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম জিতু রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। পরদিন সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

একই দিন নিহতের বড় ভাই অসীম কুমার সরকার বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

গতকাল বুধবার গাজীপুর থেকে জিতুকে র‍্যাব গ্রেপ্তার করে এবং আজ তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

Comments

The Daily Star  | English
rising misogyny in Bangladesh

The interim government’s silence over misogyny is tragic

There is chaos and dissent in every corner and no one seems to have a grip on anything.

8h ago