কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেমি, ধরলার ৪২ সেমি ওপরে

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ব্রহ্মপুত্রের বুকে আইরমারী চর। ২০ জুন ২০২২। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

কুড়িগ্রামের চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ও কুড়িগ্রাম সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তবে লালমনিরহাটে শিমুলবাড়ী পয়েন্টে ধরলার পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছে।

সংস্থাটি আরও জানায়, আজ সকাল ৬টা থেকে তিস্তার পানি লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমা (৫২ দশমিক ৬০ মিটার) ছুঁয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ব্রহ্মপুত্রের বুকে আইরমারী চরের পানিবন্দি জুলহাস মিয়া (৪৪) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পরিবারে ৫ সদস্য। গত ৬ দিন ধরে পানিবন্দি আছি। ঘরের ভেতর ৩-৪ ফুট পানি। বাঁশের মাচায় থাকছি। মাচার ওপর চুলায় রান্না করতে হচ্ছে।'

'বন্যাটি আকস্মিক হওয়ায় কোনো প্রস্তুতি ছিল না' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'নৌকায় চড়ে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূর থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে আনতে হচ্ছে। পানি আর একটু বাড়লে বাড়িতে থাকা যাবে না।'

পূর্ব দৈখাওয়ার চরের বানভাসি জাবেদ আলী (৬২০ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ব্রহ্মপুত্রের স্রোতে ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র সব ভেসে গেছে। এখন স্কুল ঘরে আছি। চরটি দুর্গম হওয়ায় কেউ খোঁজ নিতে আসছে না। এখনো কোনো ত্রাণ সহায়তা পাইনি।'

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে আড়াই লাখের বেশি বানভাসি মানুষকে সরকারি ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বানভাসিদের তালিকা করে তাদের হাতে খাবার তুলে দিচ্ছেন। বানভাসিদের জন্য ৫০০ মেট্রিক টন চাল ও ১৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, শিশুখাদ্যের জন্য ২৬ লাখ ৭০ হাজার ও গোখাদ্যের জন্য ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এ দিকে, লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলাপাড়ে কয়েকটি এলাকা থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। তবে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানিতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এ জেলার বন্যা পরিস্থিতি চরম অবনতির আশংকা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল আসা বন্ধ থাকলে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্রহ্মপুত্রের পানি কিছুটা কমবে।'

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম সাংবাদিকদের জানান, তাদের হাতে পর্যাপ্ত সরকারি ত্রাণ সহায়তা মজুদ আছে। সব বানভাসির কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। বৃষ্টি থাকায় বিতরণকাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসন বন্যা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

Comments

The Daily Star  | English

'Rab destroyed secret detention centres post August 5'

Finds Commission of Inquiry on Enforced Disappearances

58m ago