বন্যায় মৌলভীবাজারে ৪০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি

ফানাই নদীর বাঁধ ভেঙে অন্তত ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজারে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৫ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শহরাঞ্চলে বন্যার পানি গতকালের তুলনায় আজ শনিবার কিছুটা কমলেও টানা এই বৃষ্টিতে জেলার অন্তত ৪০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, মনু, ধলাই ও কুশিয়ারা নদীতে পানি বাড়ছে। কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নে ফানাই নদীর বাঁধ ভেঙে অন্তত ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পাশাপাশি বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর, বর্নি, সুজানগর ও উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বৃষ্টি না থামলেও উজানে বৃষ্টি হলে পানি আরও বৃদ্ধি পাবে।

মৌলভীবাজার শহর

শহরের আরামবাগ এলাকার বাসিন্দা নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, 'বৃহস্পতিবার রাত থেকে প্রথমে হালকা ও পরে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়। বৃষ্টিপাতে জেলা শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। আতঙ্কে রয়েছে শহরের মানুষ। বিভিন্ন এলাকায় ডুবে গেছে রাস্তা। এসব রাস্তায় কোমর পরিমাণ পানি। বাড়িঘরে পানি ওঠায় আমরা মালামাল সরাতে ব্যস্ত সময় পার করছি। রাস্তা ডুবেছে, বাসায়ও পানি। কোথাও বেরোনো যাচ্ছে না।'

পৌর মেয়র ফজলুর রহমান বলেন, 'অতিরিক্ত বৃষ্টিতে শহরের নিম্নাঞ্চলসহ কয়েকটি স্থানে ও রাস্তায় পানি জমেছে। বৃষ্টি থামলেই পানি নেমে যাবে বলে আশা করছি। তখন আর জলাবদ্ধতা থাকবে না।'

কুলাউড়া

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নে ফানাই নদীর বাঁধ ভেঙে অন্তত ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে করে বন্যার কবলে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মুহিবুল ইসলাম আজাদ জানান, শুক্রবার বিকেলে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের স্রোতে প্রায় ২০ ফুট বাঁধ ভেঙে যায়। এতে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। কর্মধা ইউনিয়নের বাবনিয়া, মহিষমারা, কর্মধা, বেরী, হাসিমপুর, ভাতাইয়াসহ গ্রামের পর গ্রাম পানিতে তলিয়ে যায়।

কমর্ধা গ্ৰামের তামজিদ আলী জানান, প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ের পানি নেমে আসায় মহিষমারা রাস্তাটি ভেঙে যায়। এতে জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।

কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এটিএম ফরহাদ চৌধুরী জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বড়লেখা

বড়লেখায় টানা ভারী বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার তালিমপুর, বর্নি, সুজানগর ও উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী জানান, বন্যাদুর্গতদের জন্য উপজেলার ৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। অন্যান্যগুলোও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পানিবন্দি মানুষের জরুরি ত্রাণ সহায়তার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছি।

জেলা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উজানে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে নদ-নদীর পানি বাড়বে। নদীভাঙনের সৃষ্টি হতে পারে। তবে বাঁধ রক্ষায় বিভিন্ন জায়গায় তাদের কাজ চলমান আছে। এ বিষয়ে আমরা সর্বাত্মক সতর্ক রয়েছি।'

Comments

The Daily Star  | English
Banks income from investment in bonds

Bond boom contributes half of bank income

The 50 banks collectively earned Tk 39,958 crore from treasury bonds in 2024, up from Tk 27,626 crore in the previous year, according to an analysis of their audited financial statements.

14h ago