বৃষ্টি-পাহাড়ি ঢলে বিপর্যস্ত সুনামগঞ্জ শহর, যোগাযোগ ব্যাহত
ভারী বর্ষণ ও মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতে সুনামগঞ্জে নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। আজ বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জ পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, শান্তিগঞ্জ, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সড়কে পানি উঠে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে নতুন করে ডুবছে সড়ক, ঘরবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সুনামগঞ্জ শহরের সাহেববাড়ি ঘাট, জগন্নাথবাড়ি এলাকা, তেঘরিয়া, বড়পাড়া, নবীনগরসহ কয়েকটি এলাকার নিচু এলাকা ও সড়ক প্লাবিত হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।
শহরের উকিল পাড়ার বাসিন্দা ইমন আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বুধবার ভোররাতে রান্নাঘরে পানি ঢোকায় সকাল থেকে রান্নাবান্না হয়নি। সারাদিন শুকনো খাবার খেয়ে আছি। আজও শুকনো খাবার খাচ্ছি।'
ষোলঘরের বাসিন্দা জোসনা বেগম বলেন, ঘরে পানি উঠায় খাট উঁচু করে থাকছি। টিউবওয়েলও ডুবে গেছে।
একমাসও যায়নি, আরেক দফায় বাড়ির উঠোনে পানি, বলেন শান্তিগঞ্জ উপজেলার ডুংরিয়া নোয়াগাঁও এলাকার কাহার মিয়া।
তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান করুণাসিন্ধু চৌধুরী বাবুল জানান, তাহিরপুর-বিশ্বম্ভরপুর সড়কের শক্তিয়ারখলা সড়ক প্লাবিত হওয়ায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-২ শামসুদ্দোহা বলেন, বুধবার বিকেলে সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ছিল আজ সেটি বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটারে ওপরে আছে।
জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সুনামগঞ্জ শহরে প্রবল বেগে পানি আসছে। আমার বাসাতেও পানি উঠেছে। আমাদের ছাতক উপজেলা পুরোপুরি পানির নিচে। দোয়ারাবাজার উপজেলার প্রায় সব জায়গায় পানি। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বন্ধ। সড়কে পানি উপচে যাচ্ছে। সুনামগঞ্জ থেকে তাহিরপুর সড়ক গত তিন দিন যাবত বন্ধ আছে। সুনামগঞ্জ সিলেটের মহাসড়কের গোবিন্দগঞ্জ বাজারের স্থানে হাইওয়ে অভারফ্লো হয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠেছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাইদুর রহমান চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, চলমান বৃষ্টিপাত আরও কয়েকদিন থাকবে। এই মাসে ৮১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের মধ্যে ৬৮৭ মিলিমিটার হয়েছে। এই কয়েকদিনে যে পরিমাণে বৃষ্টিপাত হচ্ছে, তা ১৯ তারিখ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
Comments