কোনো একটি ঘটনা চলচ্চিত্র শিল্পকে শেষ করে দিতে পারে না: ইলিয়াস কাঞ্চন

ইলিয়াস কাঞ্চন। স্টার ফাইল ছবি

বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যবসা সফল সিনেমা 'বেদের মেয়ে জোছনার' নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। বর্তমানে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। একুশে পদক পাওয়া এ অভিনেতা সম্প্রতি দ্য ডেইলি স্টারের মুখোমুখি হন। কথা বলেছেন সিনেমার ভবিষ্যৎ, সিনেমার উন্নয়নে করণীয়সহ নানা বিষয় নিয়ে।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি হিসেবে আপনি শিল্পীদের অভিভাবক। আপনার কাছে জানতে চাই, ঢাকাই চলচ্চিত্র শিল্পী কোন পথে যাচ্ছে?

দেখুন, কোনো একটি ঘটনার জন্য আমাদের সমৃদ্ধ চলচ্চিত্র শিল্পের ভবিষ্যৎ শেষ হয়ে যাবে এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। এদেশের সিনেমার সোনালী অতীত আছে। সিনেমাপ্রেমী মানুষও কম নেই। কোনো একটি ঘটনা চলচ্চিত্র শিল্পকে শেষ করে দিতে পারে না। বাবা, মা, স্বামী-স্ত্রী, ভাই-বোনের মধ্যে কী দ্বন্দ্ব হয় না? একটি সংসারে সমস্যা হলে তার সমাধানও আছে। এটাকে এত বড় করে দেখার কিছু নেই। শিল্পী সমিতির সভাপতি হিসেবে নয়, একজন চলচ্চিত্রপ্রেমী হিসেবে বলতে পারি আমাদের চলচ্চিত্রের ভবিষ্যৎ ভালো। আমি নিরাশ নই। হতাশাবাদীও নই। চিরকালীন আশাবাদী মানুষ আমি। এদেশে চলচ্চিত্রকে ভালোবাসার মানুষ আছেন।

সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর সিনেমা নিয়ে আশার কিছু দেখছেন?

অনেককিছু দেখছি। সিনেমা নির্মাণ চলছেই। সিনেমা মুক্তির সংখ্যাও বেড়েছে। গত ঈদেও সিনেমা আলোচনায় ছিল। তবে, করোনার সময়ে আমরা সবকিছুতে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। সেখান থেকে সবকিছু ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। আমাদের সিনেমাও থেমে নেই। নতুন নতুন প্রযোজক আসছেন, পরিচালক আসছেন, শিল্পীও আসছেন। দেখুন, আমাদের এখানে হল সংখ্যা অনেক কমে গেছে। কিন্তু, গত ঈদের সময়ে হল সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এটা তো অনেক আশার কথা। এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। আশার মধ্যেই বাঁচতে হবে।

নতুন কোনো সিনেমা মুক্তি পেলে আপনাকেও প্রচারে অংশ নিতে দেখা যায়...

আমি এটাকে পজিটিভভাবে দেখি। কারণ, প্রচারেই প্রসার। একটি সিনেমা মুক্তি পাওয়ার সময় শুধু ওই সিনেমা সংশ্লিষ্টরা প্রচারে নামবেন তা না করে এই অঙ্গনের সবাই যদি প্রচার করি, তাহলে অনেকে কাছে খবরটি পৌঁছে যায়। সেই ভাবনা থেকে এবং চলচ্চিত্রকে ভালোবাসি বলেই আমি কাজটি করি।

চলচ্চিত্রের উন্নয়নের জন্য কী কী উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন?

এই বিষয়টি নিয়ে এত অল্প কথায় বলে শেষ করা যাবে না। চলচ্চিত্র শিল্প একটি বড় বিষয়। এই শিল্পের উন্নয়নে সরকার অনেক কিছু করছে। বর্তমানে সরকার বেশ কিছু ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। অনুদানের পরিমাণ বাড়িয়েছে। এটাকে সাধুবাদ জানাতেই হবে। চলচ্চিত্রের উন্নয়নে সিনেমা হল সংস্কার জরুরি। যেন দর্শকরা সুন্দর পরিবেশে সিনেমা দেখতে পারেন। ভালো ভালো গল্পের সিনেমার সংখ্যা বাড়াতে হবে। যারা টাকা লগ্নি করেন বা করবেন তারা যেন সেই লগ্নি করা টাকা ফিরে পান, এটার নিশ্চয়তা পেলে প্রযোজকদের সংখ্যা বাড়বে। যেভাবে সিনেপ্লেস বাড়ছে তাতে মানুষ বেশি বেশি সিনেমা দেখবে।

অনেকেই বলছেন, এখন ওটিটির যুগ চলে আসছে, তাহলে মূলধারার সিনেমার কী হবে?

ওটিটি কখনোই মূল ধারার সিনেমার ক্ষতি করতে পারবে না। ওটিটিকে আমি সমর্থন করি। কিন্তু সত্যিকারের বিনোদন বা আনন্দ পেতে, সিনেমার সত্যিকারের ফিল পেতে প্রেক্ষাগৃহে যেতে হবে। সিনেমা হলে বসে সিনেমা দেখার সঙ্গে অন্য কোনো মাধ্যমের তুলনা ঠিক না। কোথাও যেতে যেতে হাতে মোবাইল নিয়ে সিনেমা দেখা, গল্প করতে করতে সিনেমা দেখা আর প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমা দেখার মধ্যে বিস্তর তফাত।

Comments

The Daily Star  | English

BNP sticks to demand for polls by December

In a meeting with Chief Adviser Prof Muhammad Yunus last night, the BNP restated its demands that the next general election be held by December and the government immediately announce a roadmap to that end.

6h ago