নারায়ণগঞ্জে মসজিদে পুলিশের এসআইকে মারধর, সাংবাদিক লাঞ্ছিত
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় একটি মসজিদের ভেতরে পুলিশের উপ-পরিদর্শককে (এসআই) মারধর করা হয়েছে। এ সময় তাকে বাঁচাতে গেলে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধিকে লাঞ্ছিত করা হয়।
আজ শুক্রবার দুপুর দেড়টায় সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী বিহারী ক্যাম্প এলাকায় আদমজী জামে মসজিদে এই ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনার প্রায় এক ঘণ্টা পর খবর পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ওই এসআইকে উদ্ধার করে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানান, জুম্মার নামাজের পর ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির ২ বহিষ্কৃত নেতার মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের প্রস্তুতি চলছিল। এ বিষয়ে নামাজের আগে খুতবায় মসজিদের ইমাম বক্তব্য রাখছিলেন। ওই সময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই সৈয়দ আজিজুল হক বলেন, 'ভারতের বিষয় ভারতে থাকুক, এ নিয়ে বিশৃঙ্খলা আমরা না করি।'
তিনি এ কথা বলার পর সেখানে উপস্থিত কয়েকজন ক্ষিপ্ত হয়ে এসআইয়ের সঙ্গে তর্ক শুরু করেন এবং এক পর্যায়ে মারধর করেন। এ সময় তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন মসজিদ কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদীন ও সাধারণ সম্পাদক দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি বিল্লাল হোসেন রবিন। পরে তাদেরকেও লাঞ্ছিত করা হয়।
পরবর্তীতে পুলিশ এসে সৈয়দ আজিজুল হককে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে এবং পরে ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বিল্লাল হোসেন রবিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পুলিশের ওই এসআই তার ২ ছেলেকে নিয়ে মসজিদে নামাজ পড়তে এসেছিলেন। নামাজের আগে তিনি কিশোর গ্যাং, মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, "ভারতে একটা ঘটনা ঘটেছে, এটা খুব দুঃখজনক। এটা নিয়ে সারা দেশে প্রতিবাদ হচ্ছে। তবে আমরা এটাকে টেনে এনে এখানে যেন কোনো বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না করি। এটা আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ।" এই বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গে ২৫-৩০ জন তরুণ উপস্থিত অন্যদের ক্ষেপিয়ে তুলে পুলিশের ওপর হামলা করে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা বাকি সবাইকে বুঝিয়ে সরিয়ে দিলেও ওই তরুণরা আমাদের লাঞ্ছিত করেন এবং কয়েক দফা ওই এসআইকে মারধর করেন। তখন আমরা পুলিশের সহায়তা নিতে থানায় যোগাযোগ করি।'
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনার সময় বিহারী ক্যাম্পের কিছু উশৃঙ্খল ছেলে সেখানে ছিলেন, যারা শুধু শুক্রবার নামাজে আসেন। তারা বিভিন্ন মামলার আসামি ছিলেন। তারাই মূলত হঠাৎ করে এসআইয়ের ওপর হামলা করেন।'
তিনি আরও বলেন, 'আহত এসআই বিভিন্ন সময় ওই কিশোরদের মাদক মামলায় গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন। এসব কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা করেছে।'
'ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে,' যোগ করেন তিনি।
Comments