কনটেইনার ডিপো এলাকার বাতাসে রাসায়নিকের ঝাঁঝালো গন্ধ
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোর আগুন কেড়ে নিয়েছে ৪৯ জনের প্রাণ। গতকাল শনিবার রাতে এখানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে এলাকার বাতাসে পাওয়া যাচ্ছে রাসায়নিকের ঝাঁঝালো গন্ধ।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তারা বাতাসে রাসায়নিকের তীব্র গন্ধ পাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নুর নওশাদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বাতাসে তীব্র গন্ধ ভাসছে। চোখও জ্বালা-পোড়া করছে।
সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা মোহাম্মদ আজাদ বলেন, গন্ধের কারণে কাশি হচ্ছে। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট অনুভব হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানিয়েছেন, বিএম ডিপোতে যেসব কনটেইনার ছিল সেগুলোতে রাসায়নিক পদার্থও ছিল।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন বলেন, কন্টেইনারগুলোতে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ছিল। বাতাসে এর গন্ধ ছড়িয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ইসমাইল হোসেন বলেন, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমাতে পারে। দীর্ঘমেয়াদী রোগও হতে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড শরীরে ঢুকলে শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে।
এদিকে রোববার রাতে সাড়ে ৮টার দিকে বিএম ডিপোতে গিয়ে দেখা যায়, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস এখনো উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। তারা কনটেইনারগুলো সরাচ্ছেন। দূর থেকে দেখা যাচ্ছে, এখনো সেখানে আগুন জ্বলছে।
গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় শুরু হওয়া আগুনে এখন পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াস হোসেন। দুপুর আড়াইটায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া সেল জানায়, আগুন নেভাতে সেখানে কাজ করছে ২৫টি ইউনিট।
এর পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ২৫০ জন সদস্য সেখানে উদ্ধার অভিযানে কাজ করছে বলে জানিয়েছে আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
সকালে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনোয়ার হোসেন জানান, থেমে থেমে বিস্ফোরণ হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভেতরে যেতে পারছেন না। ফলে, আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
চট্টগ্রাম থেকে ঘটনাস্থলে আসা ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা আজ সকালে জানান, পুরো ডিপোজুড়ে শত শত কনটেইনারের মধ্যে কোনটিতে কেমিক্যাল আছে বা নেই, সেটা বোঝা মুশকিল। এই পরিস্থিতিতে ভেতরে যাওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
Comments