৯ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে পালিয়েছিলেন সিএমপির এক কনস্টেবল

সম্প্রতি নেদারল্যান্ডসে প্রশিক্ষণে গিয়ে 'নিখোঁজ' হওয়া চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ২ পুলিশ সদস্যদের আগেও ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণে গিয়ে পালিয়ে যান নগর পুলিশের আরেক কনস্টেবল।

প্রায় ৯ বছর পর প্রশিক্ষণে গিয়ে আবারো ২ পুলিশের 'নিখোঁজ' হয়ে যাওয়ার ঘটনায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন নগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

সিএমপি সূত্র জানায়, সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের প্রশিক্ষণ হিসেবে ক্রিটিক্যাল রেসপন্স টিমের আওতায় অস্ত্র বিষয়ক উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিতে ২০১৩ সালের ২৭ মে থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় ছিলেন সিএমপির ৭ সদস্য। সেই টিমের সঙ্গে ছিলেন পুলিশ কনস্টেবল মো. সোহাগ।

প্রশিক্ষণ শেষে অন্য সদস্যরা দেশে ফিরে এলেও তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরেননি। প্রশিক্ষণে যাওয়ার সময় সোহাগ তৎকালীন সিএমপির এক অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের দেহরক্ষী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

ওই প্রশিক্ষণে যাওয়া সিএমপির এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে সোহাগ পুরো ট্রেনিং সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু ফেরার আগে সে তার পাসপোর্ট নিয়ে বের হয়ে যায়। পরে বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম।'

'এ ঘটনায় যতদূর মনে পরে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তবে বিষয়টি সম্পর্কে আমরা পুরোপুরি জানি না,' নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন।

২০১৩ সালে সিএমপির দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম শহিদুর রহমান বিষয়টি স্বীকার করে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণে গিয়ে সিএমপির অন্য সদস্যরা ফিরে এলেও কনস্টেবল সোহাগ ফেরত আসেননি। সেখানেই থেকে যান তিনি।'

তিনি বলেন, 'পরে এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অনেক আগের ঘটনা হওয়ায় কাগজপত্র না দেখে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার বিস্তারিত বলা একটু কষ্টকর।'

ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া আরেক পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'সোহাগের ঘটনার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের মাল্টিপল ভিসা বন্ধ করে দেয় সেখানকার কর্তৃপক্ষ। এরপর সেখানে আর প্রশিক্ষণ হয়নি। জর্ডানে হয় প্রশিক্ষণ।'

তবে এই কর্মকর্তার দেওয়া তথ্য দ্য ডেইলি স্টার পুরোপুরি যাচাই করতে পারেনি।

প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যরা বলছেন, অনেক সময় সিনিয়র অফিসারদের দেহরক্ষী থেকে শুরু করে দাপ্তরিক কাজে যারা যুক্ত, যারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন না তাদেরও প্রশিক্ষণে পাঠানো হয়। আবার অতীতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যারা প্রশিক্ষণ নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন, এমন ক্ষেত্রে তাদের নতুন করে আবার প্রশিক্ষণ এলে সেখানে অন্যদের পাঠানো হচ্ছে। এতে প্রশিক্ষণের  ধারাবাহিকতা নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে।

আবার সিনিয়র অফিসারদের বদলি হলে প্রশিক্ষণ করে আসা দেহরক্ষীরাও তাদের সঙ্গে অন্যত্র বদলি হয়ে যান। এতে প্রশিক্ষণের ফল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সিএমপি।

মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা বলছেন, প্রশিক্ষণের বাছাই প্রক্রিয়ার ত্রুটি ও পরিচিতজনদের প্রশিক্ষণে নামে বিদেশ পাঠানোয় এ ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

অনেক ক্ষেত্রে শারীরিকভাবে ফিট, মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা এবং অন্যান্য যোগ্যতা থাকার পরও বঞ্চিত হচ্ছেন অনেকে।

অফিস কর্মচারীদের কথা শুনেই অনেক ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের জন্য নাম ঠিক করা হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে।

তবে নেদারল্যান্ডসের ঘটনার পর এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলতে রাজি হননি কোনো পুলিশ কর্মকর্তা।

Comments

The Daily Star  | English

20 non-banks on BB red list

As of December last year, they disbursed Tk 25,808 crore in loans against collateral worth Tk 6,899 crore, according to the BB report

10h ago