পানি কমলেও দুর্ভোগ কমেনি হাওরের নিম্নআয়ের মানুষের

ত্রাণ না পেয়ে নিরুপায় তারা। ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা/স্টার

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার ও শান্তিগঞ্জ উপজেলায় বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও কাজে ফিরতে পারছেন না সেখানকার নিম্নআয়ের মানুষ। ঠিকমতো ত্রাণ না পাওয়ায় অনেককে শুকনো খাবার খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে।

দোয়ারাবাজারের দক্ষিণ বড়বন এলাকার আলীবুন বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘরে হাঁটু পানি ছিল। এখন কমেছে। ৫ জনের সংসার। ত্রাণ পাচ্ছি না। নিরুপায় হয়ে আছি।'

একই উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ভুজনা গ্রামের হোসনা বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ত্রাণ পাইনি। পানিবন্দি ছিলাম। কেউ খোঁজও নেননি।'

কালিকাপুর গ্রামের সাচনা বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'স্বামী নাই, আয়-উপার্জনের মতো উপযুক্ত সন্তানও নাই। অসহায় অবস্থায় ঘরবন্দি আছি। ত্রাণ পাইনি।'

বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও কাজে ফিরতে পারছেন না তারা। ছবি: মিন্টু দেশোয়রা/স্টার

একই গ্রামের দিনমজুর আজিজুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্যার কারণে কাজ বন্ধ। বাড়িতে পানিবন্দি অবস্থায় বেকার হয়ে আছি। শুনছি আমাদের এলাকায় ত্রাণ দিয়েছে। আমরা ত্রাণ পাইনি। পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে আছি।'

সুরমা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মনির উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চাহিদা অনুপাতে পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী না আসায় সবাইকে এক সঙ্গে দেওয়া যাচ্ছে না। যারা বাদ পড়েছেন ত্রাণ এলে আগে তাদের দেওয়া হবে।'

সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই ইউনিয়নের অনেকে ত্রাণ পাননি। পর্যাপ্ত ত্রাণ নেই। আমরা যা পাই তাই বিতরণ করি।'

তিনি আরও বলেন, 'আমি ৭ টন চাল পেয়েছি। প্রায় ৮০০ মানুষকে দিয়েছি। ৪০০ শুকনো খাবারের প্যাকেট বিতরণ করেছি। নগদ টাকা পায়নি। অথচ আমার ইউনিয়নে কমপক্ষে ২ হাজার মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন।'

ঘরে হাঁটু পানি হওয়ায় তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে হয়। ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা/স্টার

দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেবাংশু কুমার সিংহ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। গতকাল সোমবার পর্যন্ত উপজেলার সব কয়টি ইউনিয়নে প্রায় ৭ হাজার পরিবারের মধ্যে সরকারি ত্রাণ ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।'

এ দিকে, পানি কমছে শান্তিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব পাগলা, জয়কলস, পাথারিয়া, দরগাপাশা, পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায়।

পাথারিয়া এলাকার পারভিন বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ধীরগতিতে পানি কমছে। এখনো অধিকাংশ বাড়িতে পানি। খাবারের অভাবে আছি। বন্যায় সবকিছু ডুবে যাওয়ায় রান্না করতে পারছি না। শুকনো খাবার খেয়ে বেঁচে আছি।'

শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনোয়ার উজ জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে উপজেলার কয়েকটি জায়গায় পানিবন্দিদের শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। সবার কাছে শুকনো খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।'

জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে সাড়ে ১৪ কেজি ওজনের আরও পাঁচ হাজার বস্তার খাদ্য সহায়তা চেয়েছি। নগদ ১০ লাখ টাকা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েও চিঠি দেওয়া হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English
scholarships in Primary Education

Primary schools teachers to go on full work abstention from tomorrow

The teachers would continue their protest until their demands were met

8m ago