ভালো অবস্থানে থেকে দিন শেষ করল শ্রীলঙ্কা
মহাবিপর্যয়ের পর মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের সেঞ্চুরিতে সাড়ে তিনশ ছাড়ানো পুঁজি পেল বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে স্বাগতিকদের হতাশ করে শ্রীলঙ্কা দিচ্ছে জুতসই জবাব। ওশাদা ফার্নান্দো ফিফটি তুলে নিয়ে সাজঘরে ফিরলেও টিকে আছেন আরেক হাফসেঞ্চুরিয়ান দিমুথ করুনারত্নে। প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের বড় কোনো পরীক্ষায় ফেলতে পারছে না টাইগার বোলাররা। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে একাধিক ক্যাচ মিসের আক্ষেপও।
মঙ্গলবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিন শেষে লঙ্কানদের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১৪৩ রান। ক্রিজে আছেন অধিনায়ক করুনারত্নে ১২৭ বলে ৭০ ও নাইটওয়াচম্যান কাসুন রাজিথা ১১ বলে শূন্য রানে। হাতে ৮ উইকেট নিয়ে তারা পিছিয়ে আছে ২২২ রানে। এর আগে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস থামে ৩৬৫ রানে।
বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুতে কাঁপন ধরিয়েছিলেন লঙ্কান দুই পেসার রাজিথা ও আসিথা ফার্নান্দো। বাংলাদেশের পেসারদের তেমন পরিস্থিতি তৈরি করার কাছাকাছি যেতেও দেখা যায়নি। খালেদ আহমেদের কয়েকটি বল গুড লেংথ থেকে বাড়তি লাফিয়েছে। আরেক পেসার ইবাদত হোসেনও ছিলেন সাদামাটা।
সাকিব বল হাতে নিয়েই অবশ্য চেপে ধরেন শ্রীলঙ্কাকে। রান আটকে তৈরি করেন চাপ। কিন্তু আরেক পাশে সেই চাপ থাকেনি। নাঈম হাসানের চোটে অনেকদিন পর টেস্টে ফেরা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত তার অফ স্পিন দুই ওভারেই দেন ১৪ রান।
চা বিরতির আগে উইকেটের সুযোগ তৈরি করেছিলেন তাইজুল। এই বাঁহাতি স্পিনারের হালকা টার্ন করা দারুণ এক ডেলিভারিতে পরাস্ত হন ওপেনার ওশাদা ফার্নান্দো। আম্পায়ার এলবিডব্লিউর জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি। রিভিউ নিয়ে আম্পায়ার্স কলে হতাশ হতে হয় বাংলাদেশকে।
ওশাদা কয়েক ওভার পর অবশ্য আউট হতে পারতেন। তার এগিয়ে এসে তীব্র জোরে মারা শট হাতে জমাতে পারেননি সাকিব। ৪৩ রানে জীবন পাওয়ার পর একই কায়দায় পরে সাকিবকে ছক্কা মেরেই ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি।
২২ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৮৪ রান তোলা সফরকারীরা শেষ সেশনে শুরুতেই হারায় উইকেট। ৯৫ রানের উদ্বোধনী জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে আনন্দের উপলক্ষ এনে দেন ইবাদত। জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলে তার অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ বলে স্লিপে নাজমুল হোসেনের তালুবন্দি হন ওশাদা। ৯১ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৫৭ রান করেন তিনি।
অনেক অপেক্ষার পর সাফল্য পাওয়া বাংলাদেশের উৎসব কিছুক্ষণ পরই হতে পারত দ্বিগুণ। কিন্তু তাইজুলের বলে করুনারত্নে বেঁচে যান ৩৭ রানে। শর্ট লেগে তার ক্যাচ ফেলে দেন মাহমুদুল হাসান জয়।
কুসল মেন্ডিসকে নিয়ে আরেকটি ভালো জুটি গড়ার পথে ছিলেন করুনারত্নে। শেষ বিকালে দ্বিতীয় স্পেলে ফিরেই তাদের আলাদা করেন সাকিব। মেন্ডিস সোজা বলের লাইন মিস করলে তা আঘাত করে প্যাডে। জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। থিতু হয়ে যাওয়া মেন্ডিস ফেরেন ৪৯ বলে ১১ রানে।
দিনের অন্তিম সময়ে আরেকটি উইকেট নেওয়ার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সফল হতে পারেনি। করুনারত্নে দৃঢ়তার পরিচয় দেন। রাজিথাও অপরপ্রান্ত আগলে রাখেন। সব মিলিয়ে তৃতীয় সেশনে খেলা হয় ২৪ ওভার। ২ উইকেট হারিয়ে লঙ্কানরা তোলে ৫৯ রান।
করুনারত্নের ভাগ্য ভালোই বলতে হবে। কয়েক দফা বিপদ থেকে বেঁচে যান তিনি। ওশাদাকে ফেরানোর দুই বল আগে তার বিপক্ষে এলবিডব্লিউয়ের আবেদন উঠেছিল ইবাদতের বলে। আম্পায়ার সাড়া না দেওয়ার পর রিভিউও নেয়নি বাংলাদেশ। কিন্তু টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, আউট হতেন করুনারত্নে। পরে ব্যক্তিগত ৬৯ রানে থাকা অবস্থায় তার তোলা ক্যাচ বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হকের একটু সামনে পড়ে।
Comments