পৈত্রিক ভিটা দেখাশোনা করা অসহায় দম্পতির কোনো খোঁজ নেননি পি কে হালদার

পি কে হালদারের পৈত্রিক ভিটা দেখাশোনা করতেন প্রতিবেশি চাচা-চাচী দীজেন হালদার ও সাধনা হালদার। দীজেন হালদার গত বছর মারা যান। স্টার ফাইল ফটো

রাষ্ট্রের কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আলোচনায় আসা পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার দিঘীরজান গ্রামের প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার এলাকায় ব্যাংকের একজন বড় কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও, নিজ এলাকার কিংবা প্রতিবেশীদের অবস্থার উন্নতিতে কিছু করেননি তিনি। এমনকি প্রায় ১৮ বছর আগে গ্রামে ছেড়ে আসা পৈত্রিক ঘরটি ভেঙে পড়লেও, সেটি রক্ষায়ও কোনো উদ্যোগ নেননি পি কে হালদার।

তার বাবা প্রলব চন্দ্র হালদারের ঘরের পাশে ছোট্ট ঘরটিতে থাকতেন প্রতিবেশী চাচা-চাচী দীজেন হালদার ও সাধনা হালদার। বাবা-মাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পর এই দম্পতিই পি কে হালদারের পৈত্রিক ভিটা দেখাশোনা করতেন।

পি কে হালদারের জরাজীর্ণ পৈত্রিক ভিটা। ছবি: স্টার

অতি দরিদ্র এ দম্পতির সংসার চলত এক পালক ছেলের প্রতি মাসে দেওয়া ১ হাজার টাকায় এবং অন্যের বাড়িতে কাজ করে প্রাপ্ত উপার্জন দিয়ে। দীর্ঘ এক যুগ তাদের বাড়ির দেখাশোনা করলেও এ দম্পতির কোনো উপকার করেননি পি কে হালদার।

দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত দীজেন গত বছর বিনা চিকিৎসায় মারা যান। বর্তমানে তার স্ত্রী সাধনা অন্যের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তবে তিনি এখন আর ওই ঘরে থাকেন না। ঘরটি বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

দুই বছর আগে দ্য ডেইলি স্টারের এই প্রতিবেদকের সঙ্গে হালদার বাড়িতে কথা হয় দীজেন হালদার ও সাধনা হালদারের।

তখন তারা জানিয়েছিলেন, পি কে হালদার তাদের কোনো খোঁজখবর নিতেন না। বাড়ির অন্যান্য স্বজন ও প্রতিবেশিরা কৃষিকাজ কিংবা দিনমজুর হলেও, তাদের প্রতি কোনো সহানুভূতি ছিল না পি কে হালদারের।

তারা জানান, গত ২০ বছরে পি কে হালদার ২-৩ বার গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তবে কখনোই ২-৩ ঘণ্টার বেশি এলাকায় থাকেননি।

সর্বশেষ ১২ বছর আগে এক চাচার মৃত্যুর পর তিনি বাড়ি গিয়েছিলেন। এরপর থেকে এলাকার সাথে আর কোন যোগাযোগ ছিল না তার।

প্রায় ১৮ বছর আগে স্থানীয় দিঘীরজান মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি থাকা অবস্থায় স্থানীয়দের দ্বারা শারীরিকভাবে লাঞ্চিত হয়েছিলেন পি কে হালদার।

এরপর মা বাবাকে গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকা নিয়ে যান। এরপর তারা মা-বাবা আর গ্রামে যাননি। তার অপর ২ ভাই প্রাণেশ ও পিযুষ বেশ আগে থেকেই ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।

দিঘীরজান গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা লিলাবতী হালদার এবং দর্জি প্রলব চন্দ্র হালদার দম্পতির ৩ ছেলের মধ্যে বড় পি কে হালদার। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী পি কে স্থানীয় দিঘীরজান মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। সর্বশেষ বুয়েট থেকে সে পাশ করে ব্যাংকে চাকরি নেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Nowfel gained from illegal tobacco trade

Former education minister Mohibul Hassan Chowdhoury Nowfel received at least Tk 3 crore from a tobacco company, known for years for illegal cigarette production and marketing including some counterfeit foreign brands.

9h ago