পিরোজপুরের ‘মরু’ কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎকারী পি কে হালদার

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের দিঘীরজান গ্রামে অর্থ আত্মসাৎকারী পি কে হালদারের বাড়ি। ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের দিঘীরজান গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মা লীলাবতী হালদার ও দর্জি বাবা প্রলব চন্দ্র হালদারের ৩ ছেলের মধ্যে বড় প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী পি কে হালদারকে স্বজনরা আদর করে ডাকত 'মরু' নামে। এই 'মরু'ই দেশের কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎকারী পি কে হালদার।

মায়ের দিঘীরজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠ শেষে একই ক্যাম্পাসে মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন প্রশান্ত ওরফে মরু। পরে বুয়েট থেকে স্নাতক শেষ করে ব্যাংকে চাকরি নেন।

স্থানীয়রা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তখনো তিনি মাঝে-মধ্যে বাড়িতে আসতেন।

একসময় দিঘীরজান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন পি কে হালদার।

দিঘীরজানের বাসিন্দা আসমত আলী মোল্লা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওই বিদ্যালয়ের আর্থিক বিষয় নিয়ে জটিলতা হলে পি কে হালদারকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়।'

প্রায় দেড় যুগ আগের ওই ঘটনার পর তিনি বাড়িতে যাওয়া কমিয়ে দেন।

শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়টি পি কে হালদারের প্রতিবেশী অঞ্জলি হালদারও ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন।

অঞ্জলি বলেন, 'ওই ঘটনার পর তিনি তার মা ও বাবাকে ঢাকায় নিয়ে যান। এরপর তিনি ২-৩ বার বাড়ি এসেছিলেন।'

সর্বশেষ প্রায় এক যুগ আগে এক চাচার মৃত্যুর পর তিনি বাড়ি এসেছিলেন।

এরপর থেকে প্রতিবেশী কিংবা স্থানীয় স্বজনদের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই।

ব্যক্তিজীবনে অবিবাহিত পি কে হালদারের ২ ভাই প্রাণেশ হালদার ও পীযূষ হালদার অনেক আগে থেকেই ভারতে স্থায়ীভাবে বাস করছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা তাকে ব্যাংকের এক বড় কর্মকর্তা বলেই জানতেন।

অনেকে জানান, স্থানীয় স্বজন কিংবা প্রতিবেশীদের জন্য কিছুই করেননি তিনি। বাড়ির প্রায় সবাই কৃষি কিংবা অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। তাই তার বিষয়ে তাদের তেমন কোনো আগ্রহ নেই।

প্রতিবেশী আলো রানী হালদার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ২-৩ বছর ধরে বিভিন্ন সংস্থার লোকজন পি কে হালদারের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে বাড়িতে এসেছেন। তখন আমরা তার অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে জানতে পারি।'

'বড় অংকের অর্থ আত্মসাৎ করলেও, নিজ এলাকায় কিছুই করেননি তিনি। এমনকি, তার পৈত্রিক ঘরটি নষ্ট হয়ে পড়ে থাকলেও, সেখানে নতুন করে ঘর তৈরি করেননি,' যোগ করেন রানী হালদার।

স্কুলজীবনে তার সহপাঠী ও দিঘীরজান বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী এমদাদুল হক মোল্লা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে পি কে হালদারের সঙ্গে একই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছি। একসঙ্গে এসএসসি পাশ করেছি।'

'প্রশান্ত ক্লাসে সবসময় প্রথম হতো' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'তার অন্য ২ ভাইও খুব মেধাবী।'

ছোটবেলা থেকে শান্ত স্বভাবের প্রশান্ত ওরফে 'মরু' রাষ্ট্রের এত বড় অংকের অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত হবে, তা কখনো কল্পনা করেননি তার এ সহপাঠী।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh alleges border abuse by BSF

Those pushed-in allege torture, abuses in India

A Bangladeshi woman has alleged that India’s Border Security Force (BSF) tied empty plastic bottles to her and her three daughters to keep them afloat, then pushed them into the Feni river along the Tripura border in the dark of night, in a chilling account of abuse at the border.

3h ago