২০ বছর পর আইপডের উৎপাদন বন্ধ করলো অ্যাপল

২০১৯ সালে আইপড টাচের ৭ম প্রজন্মের ডিভাইসটি বাজারে আনে অ্যাপল। এটিই এ পণ্যের সর্বশেষ মডেল। ছবি: সংগৃহীত

বাজারে প্রচলিত ও সহজে বহনযোগ্য মিউজিক প্লেয়ার আইপডের সর্বশেষ মডেল 'আইপড টাচের' উৎপাদন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে অ্যাপল।

অ্যাপলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে প্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম দ্য ভার্জ জানিয়েছে, স্টক থাকা পর্যন্ত পণ্যটি পাওয়া যাবে। কিন্তু, এরপর নতুন করে তা বাজারে ছাড়া হবে না।

অ্যাপল শুধু গান বাজানোর জন্য আলাদা ডিভাইস বানানো বন্ধ করে দিলেও প্রতিষ্ঠানটির মতে, 'আইপডের আত্মা' তাদের সব সংগীত বাজাতে সক্ষম ডিভাইসের মাঝে বেঁচে থাকবে, যেমন—আইফোন, আইপ্যাড ও হোমপড মিনি।

আইপড টাচের উৎপাদন বন্ধের সঙ্গে একটি যুগের অবসান হলো। প্রায় ২০ বছর আগে বাজারে আসা আইপড প্রথমে শুধুই সহজে বহনযোগ্য ডিজিটাল মিউজিক প্লেয়ার ছিল।

২০১৭ সালে আইপড ন্যানো ও শাফলের উৎপাদন বন্ধ হয়। অনেকটাই আইফোনের মতো দেখতে আইপড টাচ এতদিন চালু ছিল। যাদের ডিজিটাল সংগীতের জন্য আইফোনের মতো ডিভাইস প্রয়োজন, কিন্তু ফোনের প্রয়োজনীয়তা নেই, তারা এর ভক্ত ছিলেন।

আইপড টাচের অসংখ্য ভক্ত থাকলেও এ ডিভাইস দ্রুত জনপ্রিয়তা হারায়।

মূলত স্মার্টফোনের কাছেই মার খায় আইপড। ২০১৯ সালে আইপড টাচের ৭ম প্রজন্মের ডিভাইসটি বাজারে আনে অ্যাপল। এটিই এ পণ্যের সর্বশেষ মডেল।

এককালে অ্যাপলের সেরা দুই পণ্য, আইফোন ও আইপড। ছবি: সংগৃহীত

একই বছরে আইফোন ১১ বাজারে আসলেও, আইপড টাচের সর্বশেষ মডেলে ততদিনে বেশ পুরনো হয়ে যাওয়া আইফোন ৭ এর এ১০ প্রসেসর ছিল। তখন থেকেই মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে যায় যে, আইপড থেকে নজর সরিয়ে নিচ্ছে অ্যাপল।

এর পেছনে মানুষের অভ্যাসের পরিবর্তনও বড় কারণ। বেশিরভাগ মানুষ শুধু গান শোনার জন্য দ্বিতীয় একটি ডিভাইস বহন করতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন না। বিশেষ করে, যখন অত্যাধুনিক স্মার্টফোনে খুব সহজেই এ কাজটি করা যায়। একই কারণে বাজার থেকে পয়েন্ট অ্যান্ড শুট ক্যামেরাও উধাও হয়েছে। আজকাল বেশিরভাগ মোবাইল ফোনের ক্যামেরা এসব ক্যামেরার চেয়ে বেশি শক্তিশালী।

আইপড ন্যানো, শাফল ও টাচ। ছবি: সংগৃহীত

আইপডের প্রথম মডেলগুলো নিয়ে কাজ করেছেন ডেভেলপার টনি ফ্যাডেল। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, 'আমাদের কাছে ব্যাপারটা খুব পরিষ্কার ছিল যে মোবাইল ফোন ও ফিচার ফোনের কারণে আইপড হুমকিতে পড়ে। বিশেষ করে, যখন এসব ফোনের সঙ্গে নির্মাতারা রেডিও, গান ও এমপিথ্রি বাজানোর কৌশল যুক্ত করতে শুরু করেন।'

তবে অ্যাপল বিষয়টিকে সমস্যা হিসেবে গণ্য করেনি। ফ্যাডেলের মতে, 'স্টিভের (জবস) আমলে যা যা চেষ্টা করা হয়েছে, এর সবকিছুই বাজারে নিয়ে আসতে হতো। কারণ, প্রতিটির সঙ্গেই প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব জড়িত ছিল।'

তিনি জানান, আইপডের বাজার দখল করে নিচ্ছিল আইফোন। কিন্তু, তাতে কিছু আসতো যেত না। কেননা, আইফোনকে সফল করার ওপর প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল।

যদিও আইপড খুব শিগগির দোকানের শেলফ থেকে হারিয়ে যাবে, তবুও এরকম কালজয়ী একটি ডিভাইস পুরোপুরি অদৃশ্য হয়ে যাবে—এমন ভাবার কারণ নেই। উৎসাহী মানুষজন আইপডের বিভিন্ন মডিফিকেশন প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন বলেই ভাবছেন সংশ্লিষ্টরা।

যদিও ডিজিটাল মিউজিকের বাজার অ্যাপল তৈরি করেনি, তবে তারা একে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে নিয়ে গেছে। এখন সনি ও ফিওর মতো অন্যান্য প্রতিষ্ঠান তাদের রেখে যাওয়া ঐতিহ্যকে সামনে নিয়ে যাবে—এটাই সংগীত ভক্তদের প্রত্যাশা।

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

7h ago