শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে স্পিন উইকেট বানিয়ে ফায়দা দেখছেন না সিডন্স

Jamie Siddons
ছবি: স্টার

২০১১ বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধান কোচের দায়িত্বে ছিলেন জেমি সিডন্স। এই অস্ট্রেলিয়ান দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশ দলে যুক্ত হয়েছেন ব্যাটিং কোচ হিসেবে। তিনি। দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন, এই মেয়াদে দলের ব্যাটিংকে একটা শক্ত ভিত্তি দিতে চান তিনি। কথা বলেছেন আসন্ন শ্রীলঙ্কা সিরিজ নিয়েও।

দ্বিতীয় দফায় বাংলাদেশে এসে নিজের জন্য কীরকম চ্যালেঞ্জ দেখছেন?

জেমি সিডন্স: বরাবরই ভাবতাম আমি অতি তাড়াতাড়ি বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম কাজেই ফিরতে চেয়েছিলাম। যা তখন শুরু করেছিলাম সেটা শেষ করতে পারব না। কিন্তু আবার শুরু করতে পারি দারুণ কিছু তরুণ খেলোয়াড়ের সঙ্গে। সিনিয়র খেলোয়াড়রা অবশ্যই আছে কিন্তু আমি জুনিয়র খেলোয়াড়দের নিয়ে কাজ করতে সত্যিই রোমাঞ্চিত। এখানে দারুণ কিছু প্রতিভা আছে যেমন (নাজমুল হোসেন) শান্ত, (মাহমুদুল হাসান) জয় এবং আরও কয়েকজন। তারা এরমধ্যে ভাল কিছু ইনিংস খেলেছে কিন্তু যথেষ্ট ধারাবাহিক নয়। সেটা নিয়েই আমি কাজ করব।

একদম সব ঠিক ঠাক হতে কিছুটা সময় লাগবে। এই ছেলেদের কেবল কিছু গাইডলাইন দরকার। আমি মনে করি এই কাজের জন্য আমি ঠিক লোক। আগামী দুই বছর কি করতে পারি তার জন্য মুখিয়ে আছি। আশা করি বেশি সময় পাব কিন্তু আপাতত আমার চুক্তি দুই বছরের। তামিম-মুশফিক ও অন্যদের নিয়ে যে আগে যেরকম কাজ করেছিলাম এদেরও থেকেও তেমন ফল পেতে হয়ত তিন-চার বছর লাগবে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজ জিতলেও টেস্টে ফল ছিল হতাশার। ব্যাটিং ইউনিটের কোন জায়গায় কাজ করা দরকার।

সিডন্স: আমার মনে হয় পেস, বাউন্সের বদলে স্পিনে ধরাশায়ী হওয়াটা আমাদের অবাক করে দিয়েছে। দুটি উইকেটই (ডারবান ও পোর্ট এলিজাবেথে) ছিল স্পিন বান্ধব। এমনকি ওখানে এরকম স্পিন উইকেট আমি আগে দেখিনি। কিন্তু ৫০ (৫৩) ও ৮০ রানে গুটিয়ে যাওয়াটা মেনে নেওয়া যায় না। স্পিনের বিপক্ষে ভাল করতে কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশের যখন ব্যাটিং ধস হয় এটা কি টেকনিক্যাল কারণে নাকি ড্রেসিং রুমের মনোভাবও এক্ষেত্রে বদলানো দরকার?

সিডন্স: ড্রেসিংরুমে স্থিরভাবই দেখা যায় কিন্তু যখন তারা মাঠে নামে তখন উত্তেজিত হয়ে পড়ে। প্রথম টেস্টে সাকিব-তামিম ছিল না, উইকেট ওরকম আচরণ করার পর তরুণদের জন্য তা একটু কঠিন হয়ে গিয়েছিল।

ব্যাটিং কোচ হিসেবে তাদের প্রথমবার দেখাটা একটা ভাল অভিজ্ঞতা ছিল। চাপে প্রয়োগ করতে পারছে না নাকি ভুল শট বেছে নিচ্ছে। এটা নিয়ে আমাদের কথা বলা দরকার।

এই মেয়াদে আপনার দায়িত্ব শেষ করার পর টেস্টে বাংলাদেশের ব্যাটিং ইউনিটকে কোথায় দেখতে চান?

সিডন্স:  আমরা সাদা বলে ভাল ক্রিকেট খেলি কিন্তু টেস্ট ম্যাচের জন্য দরকার হয় ধৈর্য্যশক্তি, মনোযোগ যেটা মাঝে বিরক্তিকর হবে নিজের কাছে। আমাদের খেলোয়াড়রা রোমাঞ্চপ্রিয়, তারা দ্রুত সব সারতে চায়। তাদের শেখাতে হবে এটা ভিন্ন ধরণের খেলা যেখানে দীর্ঘ সময় ব্যাট করতে হয়।

একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে লক্ষ্য হওয়া উচিত সকাল ১০টায় ক্রিজে যাওয়া আম্পায়ার খেলা শেষ করার পর সন্ধ্যা ৬টায় ফেরা। কত দ্রুত আপনি রান করলেন কেউ মনে রাখবে না, মনে রাখবে না পুল শট, সবাই মনে রাখবে কীভাবে বলগুলো আপনি ছাড়লেন এবং ঠেকালেন। আমরা সীমিত ওভার যত খেলি টেস্ট তত খেলি না। এটাও একটা বিষয়।

শ্রীলঙ্কা সিরিজে প্রত্যাশা কি?

সিডন্স: প্রভাব বিস্তার করা না করা নিয়ে কিছু বলব না, কিন্তু ঘরের মঠে আমাদের যেকোনো দলের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ ক্রিকেট খেলতে হবে। আমার মনে হয় না নিজেদের মতো উইকেট বানিয়ে লাভ হবে বিশেষ করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। আমাদের হয়ত ভাল পেসার আছে কিন্তু তাদের খুব ভালো স্পিন ও পেস ইউনিট আছে। আমার ধারণা এটা খুব কঠিন লড়াইয়ের সিরিজ হবে ।

সন্দেহ নাই দুটি টেস্টই জেতার জন্য খেলতে হবে কিন্তু আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে । ছেলেরা ঈদের ছুটির পর ফিরবে। প্রথম টেস্টের আগে আমরা চট্টগ্রামে আটদিনের ট্রেনিং করব। দেখা যাক কি হয়।

Comments

The Daily Star  | English

A father lost forever

Two-year-old Masura Islam Taskia, daughter of slain lawyer Saiful Islam Alif, remains oblivious to the tragedy that has shaken her family.

1h ago