ঈদের আগে ঢাকার বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট, দাম বেড়েছে মাংসের

রাজধানীর কচুখেত বাজার থেকে রোববার সন্ধ্যায় তোলা। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

ঢাকার বাজারগুলোতে সয়াবিন তেলের সংকট তৈরি হয়েছে। বোতলজাত তেলের চেয়েও বেশি দাম রাখা হচ্ছে খোলা তেলের। ঈদের আগে বিভিন্ন বাজার, পাড়ার দোকান এমনকি সুপার শপগুলোতেও রান্নার এই অত্যাবশ্যকীয় উপকরণটি পাওয়া যাচ্ছে না।

গতকাল রোববার ও আজ সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, কচুখেত, ভাসানটেক ও মিরপুরের বাজারগুলো ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

কারওয়ান বাজারে সোমবার সয়াবিন তেলের ৫ লিটারের বোতল বিক্রি হয় ১ হাজার টাকায়। খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ২২০ টাকা, খোলা পাম তেল লিটারপ্রতি ২১০ টাকা।

অন্যান্য এলাকার যেসব দোকানে তেল ছিল সেখানে প্রতি লিটার তেল সর্বনিম্ন ২০০ টাকায় বিক্রি হয়।

ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

এছাড়া বর্তমানে গরুর মাংস, খাসির মাংস ও সব ধরনের মুরগির দাম আরেক দফা বেড়েছে।

কচুখেতে একটি বড় মুদি দোকানে রোববার সন্ধ্যায় ৫ লিটারের সয়াবিন তেলের একটি বোতল দেখতে পাওয়া যায়। এর দাম চাওয়া হয় ৯৮০ টাকা। অথচ বোতলের গায়ে দাম লেখা ছিল ৭৬০ টাকা।

ভাসানটেক বাজারে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হয় প্রতি কেজি ২২০ টাকায়।

বাড়তি দামের ব্যাপারে এক দোকানের সত্ত্বাধিকারী আবুল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ২ দিন পাইকারি বাজারে ঘুরেও তিনি তেল সংগ্রহ করতে পারেননি। গতকাল কচুখেত বাজার থেকে ১৯৬ টাকা দরে তেল কিনেছেন। পরিবহন খরচ ও ন্যূনতম লাভ রেখে তাকে ২২০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।

রোববার কচুখেত বাজারেই খোলা সয়াবিন তেলের দাম চাওয়া হয় প্রতি কেজি ২১০ টাকা।

ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

সয়াবিন তেলকে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে গত ১০ মার্চ মাসে তেলের ক্ষেত্রে উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং ব্যবসায়ী পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট মওকুফের ঘোষণা দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এই ঘোষণা কার্যকর করার পর বোতলজাত প্রতি লিটার তেলের দাম লিটারে ৮ টাকা কমিয়ে ১৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ৫ লিটারের বোতলের দাম নির্ধারণ করা হয় ৭৬০ টাকা। আর খোলা তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় প্রতি লিটার ১৩৬ টাকা।

রোববার কচুখেত বাজারে প্রতি লিটার পাম তেল পাইকারি ১৮৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, যেখানে এর সরকার নির্ধারিত খুচরা দাম ১৩৩ টাকা।

কারওয়ান বাজারের কুমিল্লা জেনারেল স্টোরের সত্ত্বাধিকারী মো. গোফরান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তার যেখানে ৫ লিটারের ২০০ বোতল তেল প্রয়োজন সেখানে গতকাল সরবরাহ পেয়েছেন ১০ বোতল। পরিচিত ক্রেতাদের কাছেই শুধু তিনি এখন তেল বিক্রি করছেন।

এদিকে অনলাইনে ও সরেজমিনে দুটি সুপার শপে গিয়ে কোনো সয়াবিন তেল পাওয়া যায়নি। সেখানে সরিষা ও রাইস ব্রান অয়েল পাওয়া গেলেও সয়াবিন তেল ছিল না।

দাম বেড়েছে মুরগির ও গরুর মাংসের

তেলের মতোই গরু, খাসি ও মুরগির মাংসের দাম হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। মাত্র ৩ দিনের ব্যবধানে মাংসের দাম প্রতি কেজিতে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

কচুখেত, শ্যাওড়াপাড়া, মিরপুর-১, সেনপাড়া, ভাসানটেক বাজারে গরুর মাংস ৭০০ টাকা থেকে ৭২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ এক সপ্তাহ আগেও এই দাম ছিল ৬৬০ টকার আশপাশে।

পূর্ব কাজীপাড়া বাজারের মাংস বিক্রেতা জয়নাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ঈদের আগে গরুর মাংসের চাহিদা বেড়েছে। গাবতলী গরুর হাটে ৬০ হাজার টাকার গরুর দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৬ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা বেড়ে গেছে।

এই বাজারগুলোতে এক সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি সোনালি মুরগির দাম ছিল ২৭০ টাকা। সেই মুরগি রোববার বিক্রি হয় ৩২০ টাকা কেজি দরে। অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজিতে ২০-২৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৮০ টাকা।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka condemns desecration of national flag in Kolkata

Condemns violent protests outside its Deputy High Commission in Kolkata

4h ago