ইউক্রেনে ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে রাশিয়া: বাইডেন

আইওয়ায় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স

এই প্রথমবারের মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বললেন, ইউক্রেনে মস্কোর আগ্রাসন গণহত্যার সমতুল্য।

এ দিকে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, রাশিয়া লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত 'ছন্দবদ্ধভাবে ও ঠাণ্ডা মাথায়' তাদের অভিযান অব্যাহত রাখবে।

আইওয়াতে একটি ইথানল কারখানায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় বাইডেন 'গণহত্যা' শব্দটি ব্যবহার করেছেন।

আজ বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন এ কথা বলা হয়।

প্রতিবেদন মতে, এর আগে বিভিন্ন সময় বাইডেন বিভিন্নভাবে রুশ আগ্রাসনের নিন্দা করেছেন, কিন্তু তিনি 'গণহত্যা' শব্দটি এবারই প্রথম ব্যবহার করলেন।

বক্তৃতা শেষে প্রেসিডেন্টের জন্য নির্ধারিত উড়োজাহাজ এয়ারফোর্স ওয়ানে আরোহণের আগে সাংবাদিকদের বাইডেন বলেন, 'হ্যাঁ, আমি এটাকে গণহত্যা বলেছি কারণ বিষয়টি ক্রমশ পরিষ্কার হচ্ছে যে পুতিন ইউক্রেনীয় হওয়ার ধারণাটিকেই নিশ্চিহ্ন করে ফেলতে চাচ্ছেন এবং এর পক্ষে অনেক তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।'

'এটি গণহত্যা কিনা সে বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব আমরা আইনজীবীদের হাতে ছেড়ে দেব। কিন্তু, আমার কাছে একে ওরকমই (গণহত্যার মতো) মনে হচ্ছে', যোগ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

বাইডেন বেশ কয়েকবার পুতিনকে যুদ্ধাপরাধী বললেও গতকাল তিনি মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি 'গণহত্যা'র অভিযোগ আনেন।

ক্রেমলিন সব সময়ই বেসামরিক ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, রুশ বাহিনীকে অসম্মান করতে ইউক্রেন ও পশ্চিমের দেশগুলো তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনছে।

ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি শহর থেকে রুশ বাহিনী নিজেদেরকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। কিয়েভের দাবি, রুশ বাহিনী চলে যাওয়ার পর প্রতিটি শহরেই নিহত বেসামরিক ব্যক্তিদের লাশের পাহাড় জমেছে। কিয়েভ রুশ আগ্রাসনকে 'হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযান' হিসেবে অভিহিত করেছে।

ক্রেমলিনের দাবি, তারা ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণ ও উগ্রজাতীয়তাবাদী বা 'নাৎসি প্রভাব মুক্ত' করার উদ্দেশ্যে 'বিশেষ সামরিক অভিযান' শুরু করেছে। কিয়েভ ও পশ্চিমের মিত্ররা এটাকে মিথ্যে অজুহাত বলেছে।

মস্কোর গত ৭ সপ্তাহ দীর্ঘ আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৪৬ লাখেরও বেশি মানুষ ইউক্রেন থেকে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। হাজারো মানুষ হতাহত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে প্রায় একঘরে করে রাখার চেষ্টা করছে।

ভ্লাদিমির পুতিন প্রায় এক সপ্তাহ পর গতকাল সংঘর্ষ নিয়ে দেওয়া বক্তব্যে জানান, রুশ বাহিনী 'ছন্দবদ্ধভাবে ও ঠাণ্ডা মাথায়' তাদের অভিযান অব্যাহত রাখবে। নিরাপত্তা লক্ষ্যমাত্রাসহ সব ধরনের লক্ষ্য পূরণের বিষয়ে তিনি আত্মবিশ্বাসী।

আজ সকালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পুতিনকে উপহাস করে বলেন, 'কীভাবে তিনি এ রকম একটি যুদ্ধের পরিকল্পনা করলেন, যেখানে এক মাসের মধ্যে তার প্রায় ১০ হাজার সেনা মারা গেলেন?'

শান্তি আলোচনার বিষয়ে পুতিন বলেন, 'আবারও আলোচনা অচলাবস্থায় ফিরে গেছে।'

পশ্চিমের বিশ্লেষকদের দাবি, গতকালের বক্তৃতায় পুতিনের কথাবার্তা কিছুটা অসংলগ্ন ছিল এবং তিনি বারবার একই কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন। গত ২২ বছরে রুশ নেতা হিসেবে তিনি যে আত্মবিশ্বাস ও বরফের মতো ঠাণ্ডা মনোভাব দেখিয়েছেন, তা এ বক্তৃতার বড় অংশজুড়ে অনুপস্থিত ছিল।

যুদ্ধের শুরুর দিকে পুতিনকে টেলিভিশনে বারবার দেখা গেলেও প্রায় ২ সপ্তাহ আগে রুশ বাহিনী ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চল থেকে নিজেদেরকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর তিনি জনসম্মুখে খুব একটা আসেননি।

২ মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের জন্য আরও ৭৫০ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তার ঘোষণা দিতে যাচ্ছে। এর মধ্যে হাউইটজারসহ অত্যাধুনিক গ্রাউন্ড আর্টিলারি (কামান) থাকছে।

Comments

The Daily Star  | English

People will have to take to the streets for voting rights: Fakhrul

People will have to take to the streets like they did on August 5 to realise their voting rights, said BNP Secretary General Mirza Fakhrul Islam Alamgir today

20m ago