বৈষম্যবিরোধী বিল দ্রুত পাস ও কার্যকর করতে হবে

বহুল প্রতীক্ষিত বৈষম্যবিরোধী বিল সংসদে উত্থাপনের জন্য আমরা সরকারের প্রশংসা করছি। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের সমান অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করা এই বিলের উদ্দেশ্য।
ছবি: ফাইল ফটো

বহুল প্রতীক্ষিত বৈষম্যবিরোধী বিল সংসদে উত্থাপনের জন্য আমরা সরকারের প্রশংসা করছি। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের সমান অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করা এই বিলের উদ্দেশ্য।

বিলটি আইন হিসেবে পাস হওয়ার পর এটি কার্যকর করা শুরু হলে, সংবিধানের আলোকে সব ধরনের বৈষম্য রোধ করা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর অর্থ: দেশের কোনো নাগরিক সমাজের কোথাও কোনো ধরনের বৈষম্যের মুখোমুখি হলে এই আইনের অধীনে অভিযোগ দায়ের করা ও প্রতিকার চাওয়ার সুযোগ পাবেন, তা হোক কোনো সরকারি বা বেসরকারি অফিস, পাবলিক প্লেস বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

জেনে ভালো লাগবে যে আইনটি এমন কিছু মৌলিক সমস্যার সমাধান করবে, সাধারণ মানুষকে প্রতিনিয়ত যেগুলোর মুখোমুখি হতে হয়। আইনের খসড়া অনুযায়ী, সরকারি আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা বেসরকারি অফিসের সেবা প্রাপ্তিতে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর কাউকে সর্বসাধারণের কোনো স্থানে কাউকে প্রবেশ বা উপস্থিতিতে বাধা প্রদান, নিয়ন্ত্রণ অথবা সীমাবদ্ধতা আরোপ করলে তা বৈষম্য বলে বিবেচিত হবে।

এই আইন অনুযায়ী বৈষম্যের কারণে কোনো শিশুকে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে বাধা দেওয়া যাবে না বা সেখান থেকে বহিষ্কার করা যাবে না। এ ছাড়া, বাড়ির মালিকরা যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে বাড়ি ভাড়া দিতে অস্বীকার করেন কিংবা তাদের ওপর কোনো কঠোর শর্ত আরোপ করেন, তবে তারাও এই আইনের মুখোমুখি হবেন।

আমরা মনে করি, এই আইনটি প্রতিবন্ধী, দলিত, হরিজন, পার্বত্য ও সমতল উভয় অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং হিজড়া সম্প্রদায়সহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করতে এবং মর্যাদা সমুন্নত রাখতে শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে।

খসড়ায় বৈষম্য নিরোধে মনিটরিং কমিটির কথা বলা হয়েছে। কমিটিতে চা শ্রমিক, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, দলিত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি রাখার সিদ্ধান্তও প্রশংসনীয়। কমিটিকে তাদের দায়িত্ব পালনে যথেষ্ট ক্ষমতা দেওয়া হবে বলেই আমরা আশা করছি।

বিলটি এখন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির কাছে আছে। আমরা আশা করি, কমিটি প্রতিবেদন দেওয়ার আগে এটিকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করবে।

এর মধ্যে, আইনের ত্রুটিগুলো সমাধানের জন্য জাতীয় সংসদে ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মধ্যে আলোচনা চালু থাকা উচিত। সবচেয়ে বড় কথা, বিনা কারণে বিলম্ব না করে বিলটি পাস করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এর কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা উচিত।

Comments

The Daily Star  | English

Sheikh clan’s lust for duty-free cars

With an almost decimated opposition and farcical elections, a party nomination from the ruling Awami League was as good as a seat in the parliament.

2h ago