বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের করুণ হাল
করোনা মহামারিতে ২০২০ সালে সারা দেশে বন্ধ হয়ে যাওয়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা সম্পর্কে জানতে পেয়ে আমরা হতবাক। সরকারি প্রতিবেদন মতে, এই ধরনের ১৪ হাজার ১১১টি বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেছে, যার বেশিরভাগই কিন্ডারগার্টেন কিংবা এনজিও পরিচালিত বিদ্যালয়।
মহামারির মধ্যে পরিচালনা ব্যয় বহন করতে না পেরে কর্তৃপক্ষ স্থায়ীভাবে বিদ্যালয়গুলো বন্ধ করে দেয়।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য জানায়, এ সব বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংখ্যা ৮৩ হাজার ২৬৮ ও শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৪ লাখ ৬১ হাজার ৬৩৪ জন কমেছে।
আমরা মনে করি, অবিলম্বে সরকারের এই দিকে নজর দেওয়া দরকার।
অধিদপ্তরের এই প্রতিবেদনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, যে বিষয়ে আমরা অবগত ছিলাম না। গত ২ বছরে আমরা বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে এমন শিক্ষার্থী সম্পর্কে জানতাম। তবে, এত বেশি শিক্ষক চাকরি হারিয়েছেন এবং তা আর ফিরে পাননি সে সম্পর্কে সম্পূর্ণ অন্ধকারে ছিলাম।
২০২০ সালে প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল ৩৯ লাখ এবং ২০২১ সালে এই সংখ্যা কমে হয়েছে ৩১ লাখ। শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা কমে যাওয়ার এই বিষয়টি আমাদের গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে এবং এর কারণ খুঁজে বের করতে হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বলছে, বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেখানকার অনেক শিক্ষার্থী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। কিন্তু ওইসব বিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী কি ভর্তি হয়েছে? এ বিষয়ে কোনো উপসংহারে পৌঁছানোর আগে আমাদের সঠিক তথ্য জানা প্রয়োজন।
এ ছাড়াও, অধিদপ্তরের প্রতিবেদন শুধুমাত্র মহামারির প্রথম বছরের পরিস্থিতি তুলে ধরেছে। আমরা আশঙ্কা করছি, বর্তমান পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। কাজেই, বর্তমান পরিস্থিতির সঠিক সার্বিক বিশ্লেষণ এবং প্রাথমিক শিক্ষাখাতের সামগ্রিক অবস্থার উন্নতির জন্য জরুরিভিত্তিতে কাজ শুরু করতে হবে।
স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর জন্য সরকারের বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দেওয়া উচিত এবং সেগুলোর মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে পুনরায় চালু করা উচিত বলে আমরা মনে করি।
শিক্ষাবিদদের মত-অভিমত অনুযায়ী, এর আগে এ ধরনের সব প্রতিষ্ঠানকে একটি নিয়ন্ত্রক কাঠামোর আওতায় আনতে হবে।
Comments