জাতীয় হেল্পলাইন ব্যবস্থার দক্ষতা বাড়াতে হবে

ছবি: স্টার ফাইল ফটো

নাগরিকরা যদি সময়মতো সেবা না পান, তবে জাতীয় জরুরি হেল্পলাইন থাকার অর্থ কী? দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য মতে—অপরাধ, দুর্ঘটনা বা অন্যান্য জরুরি পরিস্থিতিতে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস বা অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য সেবা প্রদানকারী সংস্থার সাহায্য পেতে জাতীয় হেল্পলাইন নম্বর ৯৯৯ এ কল করে সাড়া পাওয়ার ব্যবস্থাটি বিশ্বের উন্নত দেশের তুলনায় বাংলাদেশে অনেক ধীর গতিসম্পন্ন।

দেশে ৯৯৯ এ কল করে সেবা পেতে গড়ে প্রায় ২০ মিনিট সময় লাগে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাপানের মতো দেশে সময় লাগে মাত্র ৭ মিনিট। অনেক ক্ষেত্রে হেল্পলাইনে কল করার পর সেবা প্রার্থীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

২০১৭ সালের ডিসেম্বরে দেশে এই কার্যক্রম শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে হেল্পলাইনে প্রতিদিন ৮-১২ হাজার কল পাওয়া যেত। এখন প্রতিদিন প্রায় ৩০ হাজার কল আসে। এই হেল্পলাইনের কলসেন্টারে একই সময় অন্তত ৫০০টি কল রিসিভ করার সক্ষমতা থাকার কথা ছিল। অথচ বর্তমানে একই সময়ে ৯৯৯ নম্বরে মাত্র ১০০ কল রিসিভ করা সম্ভব হয়।

পর্যাপ্ত জনবলের অভাব ও প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত বা লজিস্টিক সাপোর্ট না থাকায় বর্ধিত সংখ্যক সেবা প্রার্থীদের কলে সাড়া দেওয়া যাচ্ছে না।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এ ব্যবস্থায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেবাপ্রার্থীকে চিহ্নিত করা এবং তার অবস্থান শনাক্তের সুবিধা নেই। অথচ স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা থাকলে সেবাপ্রার্থীর সঠিক ঠিকানা বের করে সাড়া দেওয়ার সময়কে অনেকখানি কমিয়ে আনা সম্ভব হতো।

২০১৯ সালের আগস্টে স্বয়ংক্রিয় করার বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নিলেও, যে কোনো জরুরি সাহায্যের জন্য পরিচালিত এই হেল্পলাইনে গুরুত্বপূর্ণ এই ব্যবস্থা এখনো চালু করা হয়নি। ফলে ৯৯৯ নম্বরে কল করা সেবা প্রার্থীদের অবস্থান বুঝে সেখানে সাহায্য পাঠানোর ব্যবস্থা করতে অনেক সময় নষ্ট হয়।

হেল্পলাইন থেকে সেবা প্রত্যাশীর অবস্থান নির্ণয় করা থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় অপরাপর সেবা প্রদানকারী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে শেষ পর্যন্ত উদ্ধার বা সাহায্যের জন্য দল পাঠানোর পুরো প্রক্রিয়াটি বর্তমানে ম্যানুয়ালি করা হচ্ছে। এটি যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। এই ব্যবস্থাটির অদক্ষতার আরেকটি উদাহরণ এটি।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই এই সেবাকে আন্তর্জাতিকমানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে উন্নত করতে হবে। দক্ষতার সঙ্গে হেল্পলাইনটি চালাতে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে বৃহত্তর সমন্বয় করতে হবে। কারণ সবার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়াই এই ব্যবস্থাটিকে সফলভাবে পরিচালিত করার মূল চাবিকাঠি।

এ ছাড়া হেল্পলাইন থেকে জনগণের সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উল্লেখ করা জনবল সংকটের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করতে হবে।

এ ধরনের জরুরি সেবার গুরুত্ব সম্পর্কেও সচেতনতা বাড়াতে হবে, যেন কেউ বিনা কারণে কল করে বা প্র্যাঙ্ক কলের মাধ্যমে এর অপব্যবহার না করেন। দেশের জরুরি হেল্পলাইন ব্যবস্থা সফলভাবে পরিচালনা করতে এসব সমস্যা সমাধান এবং এর সংস্কার অত্যাবশ্যক।

Comments

The Daily Star  | English

Govt won’t raise power tariff despite pressure from IMF: energy adviser

The energy adviser explained that while the IMF recommended a tariff hike to ease the subsidy burden in the power sector, the government emphasised the adverse effects such a move would have on citizens already grappling with high inflation

13m ago