জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ৬.১৭ শতাংশ, মাছ-মাংস বাদ দিয়ে খরচে ‘ব্যালেন্স’
জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির হিসাব প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। মাস শেষ হওয়ার ২০ দিন পর তারা বলছে, এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে জীবনযাত্রার ব্যয় ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ বেড়েছে।
এর মধ্যে খাদ্যখাতে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে আর খাদ্য বহির্ভূত খাতে কমেছে। ফেব্রুয়ারিতে খাদ্যখাতে মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ২২ শতাংশ, যা আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৬০ শতাংশ।
অন্যদিকে খাদ্যবহির্ভূত খাতে জানুয়ারিতে ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতি পরের মাসে নেমে দাড়ায় ৬ দশমিক ১০ শতাংশে।
ঢাকার বিএমএ মার্কেটে একটি পাইকারি ওষুধ বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত একরাম হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তা কী করে হয়! আমি যে চাল কিনি তাতে এক মাসেই ৬ শতাংশের বেশি খরচ বেড়েছে। আর সেখানে, বিবিএস ২০২১ এর ফেব্রুয়ারির তুলনায় এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতির কথা বলছে।'
একরাম আরও বলেন, 'চাল ছাড়াও আমার মাসের বাজার খরচের সব পণ্যের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে বড় খরচ হয় চালের পেছনে।'
তিনি জানান, এ বছর তার বেতন বেড়েছে ২ হাজার টাকা। কিন্তু, বাজারে সব জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ।
তাহলে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের ভারসাম্য করছেন কীভাবে? তার ভাষায়, 'কোভিডের পর বাড়ির মালিক ভাড়া বাড়াননি। এটা একটা সৌভাগ্য বলা যায়। এ ছাড়া, মাছ-মাংস কেনা বাদ দিয়েছি।'
আরও জানালেন, তার মেয়ে অগ্রণী স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করেছে। এইচএসসিতে ভর্তির সময় সরকারি বদরুন্নেসা কলেজ ছিল এক নম্বর পছন্দ। কারণ এখানে খরচ কম। এভাবেই 'ব্যালেন্স' করে সংসার খরচ চলছে।
প্রেসক্লাবের সামনে কয়েকদিন টিসিবির ট্রাকের লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন একরাম। কিন্তু, লাইনে যে ঠেলাঠেলি-মারামারি হয় তাতে শেষ পর্যন্ত তিনি পণ্য কিনতে ব্যর্থ হয়েছেন। কর্মস্থলের কাছাকাছি হলেও আর সেমুখো হন না তিনি।
বিশ্বব্যাংকের সাবেক অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেনের মতে, অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি এখনও 'মডারেট' পর্যায়ে।
তিনি জানালেন, শ্রীলঙ্কায় ১৫ দশমিক ১ শতাংশ, পাকিস্তানে ১২ দশমিক ২ শতাংশ, তুরস্কে ৫৪ দশমিক ৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতি রেকর্ড হয়েছে। তবে ভারতে এই হার ৬ দশমিক ১ শতাংশ যা বাংলাদেশের প্রায় সমান।
Comments