ঢাকার ভয়াবহ যানজটের শেষ কোথায়?

ছবি: প্রবীর দাশ/ স্টার ফাইল ফটো

প্রায় ২ বছর পর অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যানজট আবার ভয়াবহ রূপ ফিরে পেতে শুরু করেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় চালু হচ্ছে, অথচ নগরীর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো প্রস্তুতিই নেয়নি। তাদের উদাসীনতায় রাজধানীবাসীকে আবার যানজটের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

ঢাকার ভয়াবহ যানজট নতুন কিছু নয়। ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর একটি এবং এ শহরে গাড়ির সংখ্যার হিসেবে যথেষ্ট রাস্তা নেই। এ কারণে যানজট এ নগরীর দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা। এর মধ্যে আবার রাস্তাগুলো ভালোভাবে তৈরি না করায়, অধিকাংশ রাস্তা মেরামত করা প্রয়োজন বা সেগুলো মেরামতের কাজ চলে। এ দিকে, ঢাকার গণপরিবহন ব্যবস্থা বিশ্বের অন্যতম খারাপ ব্যবস্থাগুলোর একটি।

যানজটের দুর্ভোগের পাশাপাশি এর কারণে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরও কেন আমরা এটিকে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হিসেবে মেনে নিচ্ছি? কেন ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যাপক ও কার্যকর পরিকল্পনা নিতে পারেনি? তাদের ফাঁকা বুলি শুনে শুনে আমরা আর কতদিন খুশি থাকব?

মহামারি চলাকালে ২ বছর রাস্তাগুলো বেশ ফাঁকাই ছিল। সে সময়ে রাস্তাগুলো উন্নত করার কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু, কর্তৃপক্ষের মধ্যে এ নিয়ে তেমন আগ্রহ দেখা যায়নি। যানজট সমস্যাকে সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে মেনে নিলেও, সরকারি উচ্চপদস্থ ব্যক্তি বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এ বিষয়ে বরাবরই উদাসীন। এর কারণ কি রাস্তা আটকে দিয়ে সাধারণ মানুষের সমস্যা করে যানজটের মুখোমুখি না হয়েই তাদের রাস্তা চলতে পারা?

অবশ্যই আরও অনেক কারণ আছে ঢাকার ট্রাফিক সমস্যার পেছনে। যেমন, ট্রাফিক আইন না মেনে চলা, যদিও এসব আইনের খুব কমই প্রয়োগ হতে দেখা যায়, আইন লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে ট্রাফিক পুলিশের ঘুষ নেওয়া ইত্যাদি। কিন্তু, এসব সমস্যার মূলে অনেক ক্ষেত্রেই প্রশাসনিক জটিলতা খুঁজে পাওয়া যায়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আন্তরিক হলে এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব।

ঢাকা প্রতি মিনিটে বসবাসের আরও 'অযোগ্য' হয়ে উঠছে। নগরীর ট্রাফিক সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার ক্ষেত্রে কোনো অজুহাতই গ্রহণযোগ্য নয়। বরং তাদের উদাসীনতার কারণেই সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান নষ্ট হচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English

Are we trying to get ‘everything, everywhere, all at once’?

The euphoria of August 5, and the momentous days leading up to it, especially since July 15, are now being overshadowed by a cloud of uncertainty.

5h ago