সিডনিতে প্রবল বন্যা: বাসিন্দাদের ঘর ছেড়ে নিরাপদে যাওয়ার নির্দেশ
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের রাজধানী সিডনি ও এর আশপাশের অঞ্চলগুলোয় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতের ফলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে পানির নিচে তলিয়ে গেছে কয়েকটি এলাকা। রাজ্যজুড়ে ১০ জনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকেই।
রাজ্যের জরুরী বিভাগ বন্যার উদ্বেগের কারণে দক্ষিণ-পশ্চিম সিডনি শহরতলীর কয়েক হাজার বাসিন্দাকে অবিলম্বে ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার জোরালো নির্দেশ দিয়েছে।
এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে: সাসেক্স ইনলেট, চিপিং নর্টন, জর্জেস হল, পিকনিক পয়েন্ট, প্লেজার পয়েন্ট, স্যান্ডি পয়েন্ট ল্যান্সভেলে, হোলসওয়ার্দি, মিলপেরা, মুরব্যাঙ্ক ও ওয়ারউইক ফার্মের কিছু অংশ।
জরুরী বিভাগ থেকে বাসিন্দাদের ঘর ছাড়ার আদেশ দিয়ে টেক্সট বার্তা পাঠিয়েছে এবং ল্যান্ডলাইনেও রিং করছে। জরুরি পরিষেবার কর্মীরা কিছু এলাকায় দরজায় কড়া নেড়ে বাসিন্দাদের অবিলম্বে চলে যেতে বলছেন।
সিডনির পশ্চিমে প্রবল ঝড়ের কবলে পড়ে একটি প্রাইভেট কার পানিতে তলিয়ে গেলে মা ও ছেলের মৃত্যু হয়। সিডনির বেশ কয়েকটি বড় সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জনগণকে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার না করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে, রিভার রোড, ক্যাটার ক্রিসেন্ট, ব্যাঙ্কসিয়া স্ট্রিট ও ফেয়ারভিউ ক্রিসেন্টসহ বেশ কয়েকটি নিচু রাস্তার পাশের বাসিন্দাদের আজ মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে নিরাপদস্থানে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্য জরুরী বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় সহায়তার জন্য আড়াই হাজারের বেশি কল এসেছে। কমিশনার কার্লেন ইয়র্ক বলেছেন, 'পানিতে আটকে পড়া ১০০ গাড়িচালককে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে হেলিকপ্টার ও নৌকা।'
সিডনি মেট্রোপলিটন এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার সহায়তায় প্রায় ২০০ অস্ট্রেলিয়ান প্রতিরক্ষা বাহিনীর সৈন্য প্রস্তুত রয়েছে।
কার্লেন ইয়র্ক বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার আদেশকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য সতর্ক করেছেন।
তিনি বলেন, 'রাজ্যজুড়ে তীব্র বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় আগামী ২৪ ঘণ্টা আমাদের জন্য কঠিন সময়।'
বন্যা কবলিত উত্তর নদী অঞ্চলে এখন পর্যন্ত সাড়ে ৫ হাজার বাড়ির মধ্যে ৩ হাজার বাড়ি বসবাসের অযোগ্য হয়েছে বলে জরুরী বিভাগ জানিয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, আজ রাতে সিডনি মেট্রোপলিটন এলাকায় প্রবল বৃষ্টির ফলে শুধু যে নদীর উচ্চতা বৃদ্ধি ও বড় বন্যার আশংকাই থাকছে তা নয়, বরং ভয়ংকর বজ্রঝড়েরও সম্ভাবনা রয়েছে।
আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
Comments