একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে গদখালীতে ৩ কোটি টাকার ফুল বিক্রি

জমি থেকে ফুল তুলছেন গদখালীর চাষিরা। ছবি: স্টার

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে যশোরের গদখালীতে প্রায় তিন কোটি টাকার ফুল বিক্রি করেছে চাষিরা। ভালোবাসা দিবস ও পহেলা ফাল্গুনে ফুলের কাঙ্ক্ষিত দাম পাওয়ার পর একুশে ফেব্রুয়ারিতেও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ফুল বিক্রি হয়েছে।

ফুল চাষি আনোয়ার হাসেন জানান, গত দুই দিন আগে গদখালীর চাষিরা প্রতিটি গোলাপ বিক্রি করেছেন ১২/১৩ টাকায়, জারবেরা বিক্রি হয়েছে প্রকারভেদে ৮ থেকে ১০ টাকায়, প্রতি বান্ডেল রজনীগন্ধা ১ হাজার ৮০০ টাকা, একশ গ্লাডিওলাস ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকায় এবং প্রতি হাজার গাঁদা ফুল বিক্রি হয়েছে দেড় হাজার টাকায়।

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সূত্র জানায়, যশোরে ফুলচাষি রয়েছে প্রায় ৬ হাজার। জেলায় প্রায় ১৫০০ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়। ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী, পানিসারা, নাভারণ, নির্বাসখোলায় ১১ জাতের ফুল চাষ হয়।

গদখালীতে যশোর রোডের দুই ধারে যে ফুলের বাজার বসে তা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড়। একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে গত দুই দিন আগে থেকে এই বাজারে ফুল বিক্রি জমে উঠেছে। প্রতিদিন ভোরে ক্রেতা-বিক্রেতায় সরব হয়ে ওঠে গদখালীর ফুলের বাজার।

সেখানে গিয়ে দেখা যায়—গোলাপ, রজনীগন্ধা, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, জারবেরা ফুলের পসরা নিয়ে বসেছেন শত শত ফুলচাষি। কেউ ভ্যান, কেউ সাইকেল বা ঝুড়ির মধ্যে ফুল রেখে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দরকষাকষি করছেন।

গত দুদিন ফুলের বাড়তি চাহিদা থাকায় পাইকারি ফুল ব্যবসায়ীরা অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি বেশি ফুল কিনছেন বাজার থেকে। বেশি দাম পাওযায় বাজারে দ্বিগুণ ফুল এনেছে চাষিরা।

ফুল চাষি বাবলুর রহমান জানান, ভালোবাসা দিবস, বসন্তবরণ আর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এবার বেচাকেনা অনেক ভালো হয়েছে।

গদখালীর প্রথম টিউলিপ চাষি ইসমাইল হোসেন জানান, তার ৫ শতক জমিতে এবার সাত প্রকারের টিউলিপ ফুল ফুটেছে। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে টিউলিপ ফুটতে শুরু করে। এবার সব ফুল বিক্রি হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটি সভাপতি আব্দুর রহিম জানান, করোনায় বিধি-নিষেধ নিয়ে আমরা চিন্তায় ছিলাম। ফুলের বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মানুষ বাজার থেকে ফুল কিনেছেন। বসন্ত বরণ, ভালোবাসা দিবস ও মাতৃভাষা দিবসে ফুলের ভালো বাজার ভালো ছিল। একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষেই কমপক্ষে ৩ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে চাষিদের।

Comments