দুদক যেন জনগণের আস্থা না হারায়

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনের সঙ্গে যে আচরণ করেছে তাতে আমরা বিস্মিত। গত ৩ বছরে ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার করা মামলার বিষয়ে খোঁজ না নিয়ে, ভূমি অধিগ্রহণ সিন্ডিকেটের যাদের বিরুদ্ধে তিনি মামলা দায়ের করেছিলেন তাদের কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে সংস্থাটি শরীফ উদ্দিনকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গত ৩ বছরে শরীফ উদ্দিন চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ক্ষমতাসীন দলের মেয়র ও সাবেক মন্ত্রীর ছেলেসহ ধনী ও ক্ষমতাবান বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করেছেন এবং বিভিন্ন ব্যক্তি ও মহলের বিরুদ্ধে ২২টি মামলা দায়েরের সুপারিশ করেছেন।

তবে কোনো মামলা দায়ের না করে দুদক ওই অভিযোগগুলো পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেয়। ঠিক কী কারণে দুর্নীতি দমন কমিশন পুনঃতদন্তের জন্য প্ররোচিত হয়েছিল তা ওই প্রতিবেদনগুলোর সঙ্গে পরিচিত কারও কাছে স্পষ্ট নয়। তাছাড়া জনসাধারণ ও মিডিয়ার কাছেও নয়। দুদককে তার এই আচরণের ব্যাখ্যা দিতে হবে।

২০১৯ সালে শরীফ উদ্দিন জমি অধিগ্রহণ দুর্নীতির অভিযোগে কক্সবাজারে ১৫৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকে ৩টি পৃথক চার্জশিট জমা দেন। দুর্নীতি পর্যবেক্ষক সংস্থাটি অবশ্য সেই চার্জশিট অনুমোদন করেনি। প্রশ্ন হলো, কেন? তার প্রতিবেদনে কি আইনি ত্রুটি ছিল? নাকি ক্ষমতাধর মহল, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছিল, তাদের সেখানে কোনো ভূমিকা ছিল? এ বিষয়ে আবারও দুদক জনগণের কাছে ব্যাখ্যা দেওয়ার দাবি রাখে।

কমিশন যে কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে, আমরা মনে করি তার বিষয়ে বরখাস্তের জন্য যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি। তাকে কোনো কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়নি বা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনো ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়নি।

চাকরিচ্যুত সহকর্মীর সমর্থনে সরকারি কর্মচারীরা সব সময় রাস্তায় নেমে আসেন, এমন নয়। আমাদের দৃষ্টিতে এটি তার পরিচিতি ও সততার একটি দৃষ্টান্ত।

আমরা মনে করি, দুদক এখন জনগণের মনে বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব তৈরি করেছে এবং এ বিষয়ে আমরা ওপরে যে বিষয়গুলো তুলে ধরেছি সেগুলো সম্পর্কে পরিষ্কার হওয়া দরকার।

দুর্নীতি সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর পাশাপাশি এর কর্মকর্তাকে বরখাস্তের বিষয়ে সংস্থাটি যে ব্যবস্থা নিয়েছে তার যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে হবে।

দুদককে অবশ্যই তার সততা প্রমাণ করতে হবে এবং দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা হিসেবে তার অবস্থান শক্তিশালী করতে হবে যাতে জনগণ বিশ্বাস রাখতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English
Banks income from investment in bonds

Bond boom contributes half of bank income

The 50 banks collectively earned Tk 39,958 crore from treasury bonds in 2024, up from Tk 27,626 crore in the previous year, according to an analysis of their audited financial statements.

14h ago