১২ কোটি টাকার প্রকল্পের জন্য ভাঙা হবে ৪ কোটির সুইমিং পুল

চট্টগ্রাম শহরের জাতিসংঘ পার্কে ২০১২ সালে ২টি সুইমিং পুল নির্মাণ করেছিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) কর্তৃপক্ষ। প্রায় ৭ বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকার পর পুল ২টি ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

পার্কটির উন্নয়নে এখন ১২ কোটি ১২ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। এই প্রকল্পের আওতায় সুইমিং পুল ২টি ভাঙা হবে।

সিসিসি সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে জাতিসংঘ পার্কে ২টি সুইমিং পুল ও জিমনেসিয়াম নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৫ সালের জুন মাসে নির্মাণকাজ শেষ হয়।

সিসিসির নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি আব্দুল্লাহ আল ওমর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অপরিকল্পিতভাবে সুইমিং পুলগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল। আমরা শিগগির সেগুলো ভেঙে ফেলব।'

তিনি বলেন, 'প্রচুর কারিগরি ত্রুটি থাকায় সুইমিং পুলগুলো প্রায় ৭ বছর ধরে পড়ে আছে।'

এই সুইমিং পুলগুলো প্রতিটি ১২০ ফুট লম্বা এবং ৫০ ফুট চওড়া। গভীরতা ৮ থেকে সাড়ে ৮ ফুট।

পুল ২টির নির্মাণ খরচের ব্যাপারে জানতে চাইলে আবদুল্লাহ আল ওমর এ বিষয়ে সিসিসির প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। প্রধান প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও কোনো তথ্য দিতে পারেননি। পরে সে সময় প্রকাশিত বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ঘেঁটে ৪ কোটি টাকা খরচের বিষয়টি জানা যায়।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিভাগ-১) রাহুল গুহ বলেন, 'আমরা জাতিসংঘ পার্কের উন্নয়নের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রায় ১২ কোটি ১২ লাখ টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছি। পার্কের অপরিকল্পিত সুইমিং পুলগুলো আমরা ভেঙে ফেলব।'

রাহুল বলেন, 'জাতিসংঘ পার্কের মোট আয়তন ছিল ২ দশমিক ১৭ একর। সেখানে শূন্য দশমিক ৯ একর জায়গায় অপরিকল্পিতভাবে দুটি সুইমিং পুল ও একটি জিমনেসিয়াম নির্মাণ করা হয়েছিল। আগামী ৪-৫ মাসের মধ্যে আমরা উন্নয়নকাজ শুরু করব।'

স্থানীয় বাসিন্দা মো. মহিউদ্দিন জানান, ১৯৬৪ সালে পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকায় একটি বড় পুকুর ভরাট করে পার্কটি তৈরি করা হয়েছিল। পিডব্লিউডি ১৯৬৯ সালে পার্কটি চট্টগ্রাম মিউনিসিপাল করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করে। ২০০২ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে পার্কটির নাম হয় জাতিসংঘ পার্ক।

জিয়াউল হক নামের স্থানীয় একজন বলেন, 'পার্কটি ছিল বন্দর নগরীর অন্যতম সেরা উন্মুক্ত জায়গাগুলোর একটি। সুইমিং পুল ও জিমনেসিয়াম নির্মাণ করায় পার্কটি সংকুচিত হয়ে গেছে।'

ইন্সটিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক চেয়ারম্যান দেলোয়ার মজুমদার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কারো অজ্ঞতার কারণে জনগণের করের টাকা নষ্ট হলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে।'

তিনি বলেন, 'নির্মাণে কোনো ত্রুটি থাকলে কর্তৃপক্ষের উচিত সেটা না ভেঙে সমস্যা সমাধানে মনোযোগ দেওয়া।'

Comments

The Daily Star  | English

Industrial output soars, but where are the jobs?

Over the past decade, more and more industries have sprung up across the country, steadily increasing production. But while output rose, factories did not open their doors to more workers.

10h ago