সিলেটে যেসব ঘটনায় কৌতূহল জাগানিয়া প্রথম দিন
'বিপিএলে খেলার চেয়ে নাকি ধুলো বেশি'- কৌতুক করে বলা কথাটা প্রতি আসরেই কোন একটা সময় বাস্তবের রূপ পায়। এবার চট্টগ্রাম পর্বে দেখা গিয়েছিল তেমন কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা। সিলেটে প্রথম দিনেও প্রশ্নবিদ্ধ কিছু ঘটনা কেড়ে নিল মাঠের খেলার লাইমলাইট।
তাসকিনের ছিটকে যাওয়া কি কেবল ইনজুরিতেই?
এবার বিপিএলে ড্রাফটের বাইরে থেকে তাসকিন আহমেদকে দলে নিয়েছিল সিলেট সানরাইজার্স। প্রথম চার ম্যাচ খেলার পর পঞ্চম ম্যাচে এই পেসারকে একাদশে দেখা যায়নি। পরে জানা যায় পুরনো পীঠের চোট ফিরে আসাতেই নেই তিনি। তবে বাকি অংশ খেলতে দলের সঙ্গে তাসকিন এসেছিলেন সিলেটেও। দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপে জানিয়েছিলেন, চোটের অবস্থা ভালোর দিকে। শেষ চার ম্যাচের অন্তত দুটি খেলতে পারেন তিনি।
তবে সোমবার দুপুরেই সানরাইজার্স কর্তৃপক্ষে তাসকিনের ছিটকে যাওয়ার খবর নিশ্চিত করে জানিয়ে দেয়। অথচ তাসকিনের ভাবনায় ছিল শেষ দুই ম্যাচ। তার ইনজুরি ছিটকে যাওয়ার মতো কিনা জানতে চাইলে কৌতূহল জাগানিয়া হাসিতে এড়িয়ে গেছেন তাসকিন। অর্থাৎ তার চোট নিয়ে অস্পষ্টতা থেকেই গেছে।
চট্টগ্রাম পর্বের পর আরেকটি খবরে এসেছিলেন তাসকিন। পারিশ্রমিকের পুরো ৩৫ লাখ টাকা না পেলে তিনি খেলবেন না, এমন হুমকি নাকি দিয়েছিলেন। বিপিএলের গর্ভনিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক জানিয়েছিলেন, নিয়ম অনুযায়ী টুর্নামেন্ট চলাকালীন ৭০ শতাংশ পারিশ্রমিক পরিশোধ করা হয়েছে। বাকি টাকা দেওয়া হবে টুর্নামেন্ট শেষে। পরে তাসকিন ও সানরাইজার্স উভয় পক্ষই বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি বলে অবিহিত করে। এবার তার চোট নিয়েও দুই পক্ষ থেকে দুই রকম কথা শোনা গেল।
টসের আগে আবার অধিনায়কত্ব বদলের নাটক
খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে ম্যাচে নিয়মিত অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেনের বদলে টস করতে নামতে দেখা যায় রবি বোপারাকে। পরে দলটি জানায় মাঠে এসে তারা বদলেছেন অধিনায়ক! মোসাদ্দেক একাদশে থাকলেও আর অধিনায়ক নন! দলটির ব্যাখ্যা মোসাদ্দেক নিজেই অধিনায়কত্বের বোঝা সরিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন। দুই ম্যাচ আগেই সে কথা জানিয়েছিলে দলকে। পরে সহ-অধিনায়ক এনামুল হক বিজয়ও দায়িত্ব নিতে রাজি হননি। এই ম্যাচে নামার আগে বোপারা রাজি হওয়াতে তাকে দেওয়া হয় সেই ভার।
এই নিয়ে বিপিএলে দ্বিতীয়বার এমন ঘটনা ঘটল। এর আগে চট্টগ্রাম পর্বে মেহেদী হাসান মিরাজকে আচমকা নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেয় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স কর্তৃপক্ষ। মিরাজও পরে বিষয়টি মেনে না নিয়ে গণমাধ্যমে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসেন। দল ছেড়ে যাওয়ারও হুমকি দেন। পরে বিসিবির শুনানিতে দুই পক্ষই নিজেদের ভুল স্বীকার করে নেয়।
তবে টসের আগে এভাবে নেতৃত্ব বদল কোন বিচারেই পেশাদারি প্রক্রিয়া নয়। যেকোনো টুর্নামেন্টে এই ধরণের ঘটনা তৈরি করে প্রশ্ন। টুর্নামেন্টের সার্বিক মান নিয়েও তৈরি হয় সংশয়।
বোপারার টেম্পারিং
ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টিতে অভিজ্ঞতার বিস্তর ভাণ্ডার রবি বোপারার। অথচ এই ইংলিশ ক্রিকেটার বেমালুম ভুলে গেলেন নিয়ম! বল টেম্পারিং করে ধরা পড়ে দিনের শেষ ভাগে তৈরি করেন আলোচনার খোরাক। খুলনা টাইগার্সের ইনিংসের নবম ওভারে দেখা যায় নখ দিয়ে বলের আকৃতি বিকৃত করছেন তিনি। যেটা নজর এড়ায়নি আম্পায়ারদের। বদল করা হয় বল। বোপারাকে ডেকে ৫ রান পেনাল্টি করা হয় সানরাইজার্সকে। এছাড়াও শাস্তি পেতে পারেন তিনি। ক্যামেরার একদম সামনে নিয়ে তার এমন টেম্পারিং বেশ বিস্ময়কর।
কোন ভূমিকা ছাড়াই খেললেন নাজমুল ইসলাম অপু!
বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে সিলেট সানরাইজার্সের একাদশে ছিলেন নাজমুল ইসলাম অপু। এই টুর্নামেন্টে প্রথম দুই ম্যাচে তিনি নিয়েছিলেন ৭ উইকেট। পড়ে চোটে পড়ে ছিটকে গিয়েছিলেন। এদিন একাদশে ফিরলেও বল হাতেই পেলেন না। মোসাদ্দেক অফ স্পিন বল করে অনেক খরুচে বল করলেন, তবু ডাক পড়েনি অপুর। ব্যাট হাতে তার ভূমিকা রাখার প্রশ্নই নেই। এগারো নম্বরেই থাকে তার পজিশন। এদিন সেই পর্যন্ত ব্যাটিং যায়নি। তার যে সামর্থ্য, সেই বোলিংয়ে একবারও তাকে কাজে লাগানোর কথা মনে পড়ল না বোপারার। একজন ক্রিকেটার খেললেন, কিন্তু ম্যাচে তাকে কোন ভূমিকাতেই কাজে না লাগানো বেশ বিস্ময়ের।
Comments