জ্যাকসের ঝড়ের পর মোস্তাফিজের 'প্রথম' ৫ উইকেট

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

প্রথমে আফিফ হোসেন ও পরে শামীম পাটোয়ারিকে সঙ্গে নিয়ে উইল জ্যাকস দিচ্ছিলেন বড় সংগ্রহের সুবাস। কিন্তু হঠাৎ করে নামা বৃষ্টির বাধা এড়িয়ে ফের খেলা শুরু হলে ছন্দ হারিয়ে পা হড়কাল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। খরুচে প্রথম ওভারের পর আক্রমণে ফিরে ৫ উইকেট তুলে নিলেন বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। তাতে লক্ষ্যটা থাকল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের নাগালের মধ্যে।

বৃহস্পতিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বড় রানের দিকে ছুটছিল চট্টগ্রাম। তবে মোস্তাফিজ জ্বলে ওঠায় শেষদিকে তাল ধরে রাখতে পারেনি দলটি। বৃষ্টির কারণে ১৮ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে তারা পেয়েছে ৮ উইকেটে ১৩৮ রানের সংগ্রহ। তবে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে কুমিল্লার লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে ১৪৪ রান।

চট্টগ্রামের পক্ষে জ্যাকস ৩৭ বলে সর্বোচ্চ ৫৭ রান করেন। তার ইনিংসে ছিল ৫টি চার ও ৩টি ছক্কা। কুমিল্লার হয়ে ৪ ওভারে ২৭ রানে ৫ উইকেট নেন মোস্তাফিজ। বিপিএলে এটাই তার ৫ উইকেট শিকার করার প্রথম নজির।

ইনিংসের শুরুতেই ধাক্কা খায় চট্টগ্রাম। তৃতীয় বলে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার চ্যাডউইক ওয়ালটন। নাহিদুল ইসলামকে মিড অফের ওপর দিয়ে ওড়াতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করে ফেলেন এই ক্যারিবিয়ান। সহজ ক্যাচ অনায়াসে লুফে নেন কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। তখনও স্কোরবোর্ডে ওঠেনি কোনো রান।

উইকেট হারানোর আঘাত সামলে রানের চাকায় দম দেন আরেক ওপেনার জ্যাকস ও আফিফ। ঝুঁকি ছাড়াই রান বাড়াতে থাকেন তারা। দুজনই রানের খাতা খোলেন চার মেরে। ওয়ালটনের বিদায়ের পর ডিপ মিড উইকেট দিয়ে নাহিদুলকে বাউন্ডারি হাঁকান জ্যাকস। বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলামের করা দ্বিতীয় ওভারে আসে ১৩ রান। আফিফ ফাইন লেগ ও থার্ড ম্যান দিয়ে চার মারার পর স্কয়ার লেগ দিয়ে বলকে সীমানাছাড়া করেন জ্যাকস।

পাওয়ার প্লের প্রতি ওভারেই আসতে থাকে বাউন্ডারি। ষষ্ঠ ওভারে স্পিন সরিয়ে প্রথমবারের মতো আক্রমণে পেস আনে কুমিল্লা। কিন্তু মোস্তাফিজ আঁটসাঁট বোলিংয়ের বদলে উল্টো দেন ১৪ রান। তার শেষ দুই ডেলিভারিতে চার ও ছক্কা মেরে দলের সংগ্রহ পঞ্চাশ ছাড়িয়ে নেন জ্যাকস। ৬ ওভার শেষে চট্টগ্রামের রান দাঁড়ায় ১ উইকেটে ৫৫।

অষ্টম ওভারে ফিরেই কুমিল্লাকে ব্রেক থ্রু এনে দেন তানভীর। তার নিচু হয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে বোল্ড হন আফিফ। আরও একবার থিতু হয়ে ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন তিনি। তার বিদায়ে ভাঙে ৪০ বলে ৬২ রানের জুটি। আফিফের ব্যাট থেকে ৪টি চারে আসে ২১ বলে ২৭ রান।

প্রতিপক্ষকে চেপে ধরার সুযোগ না দিয়ে শামীমকে নিয়ে আরেকটি জুটি জমান ইংলিশ ব্যাটার জ্যাকস। দ্বাদশ ওভারে তাদের সংগ্রহ পেরিয়ে যায় শতরান। এর আগেই ফিফটি স্পর্শ করেন জ্যাকস, ৩১ বলে। চলতি বিপিএলে এটি তার তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি।

চট্টগ্রামের ইনিংসের ১২.৫ ওভারের পর আচমকা নামে মুষলধারে বৃষ্টি। তখন তাদের সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ১০৭ রান। বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ থাকে এক ঘণ্টা চার মিনিট। সময় নষ্ট হওয়ায় ম্যাচের দৈর্ঘ্য নেমে আসে ১৮ ওভারে। কিন্তু ফের ব্যাট-বলের লড়াই শুরু হলে খেই হারায় দলটি। মোস্তাফিজের তোপে পড়ে কাঙ্ক্ষিত পুঁজি পায়নি তারা।

চতুর্দশ ওভারে আক্রমণে ফিরে দুই সেট ব্যাটার জ্যাকস ও শামীমকে সাজঘরে পাঠান মোস্তাফিজ। পয়েন্টের ওপর দিয়ে হাঁকাতে গিয়ে নাহিদুলের তালুবন্দি হন শামীম। ৪টি চারে ২২ বলে ২৬ রান করেন তিনি। তাতে ভাঙে ৩৮ বলে ৪৭ রানের জুটি। দুই বল পর লং অনে ফাফ ডু প্লেসির হাতে ক্যাচ দেন জ্যাকস।

নিজের পরের ওভারে চট্টগ্রামের অধিনায়ক নাঈম ইসলাম ও বেনি হাওয়েলকে বিদায় করেন মোস্তাফিজ। চমৎকার রিফ্লেক্সে নাঈমের ফিরতি ক্যাচ নেন তিনি। আর ইনিংসের শেষ ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজকে মিড অফে ইমরুলের ক্যাচ বানিয়ে ৫ উইকেট পূরণ করেন কাটার মাস্টার খ্যাত এই তারকা। মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী রানআউট হন একদম শেষ বলে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ১৮ ওভারে ১৩৮/৮ (ওয়ালটন ০, জ্যাকস ৫৭, আফিফ ২৭, শামীম ২৬, হাওয়েল ৩, নাঈম ৩, মিরাজ ৪, আকবর ১২*, মৃত্যুঞ্জয় ১; নাহিদুল ১/২১, তানভীর ১/২১, নারিন ০/৩২, মোস্তাফিজুর ৫/২৭, মঈন ০/২৭, সুমন ০/৭)।

Comments

The Daily Star  | English

Hasina’s extradition: Dhaka to remind Delhi after certain time

Bangladesh is expecting a reply from India regarding its request for former Prime Minister Sheikh Hasina's extradition and will send a reminder after a certain period if no reply is received from New Delhi, said a spokesperson today

1h ago