কুমিল্লাকে মাটিতে নামাল মাহমুদউল্লাহরা
ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেললেন মিনিস্টার ঢাকার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। দারুণ সঙ্গ পেলেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান তামিম ইকবালের। তাতে বড় পুঁজি মিলে দলটির। এরপর বাকি কাজ সারেন বোলাররা। ফলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে মাটিতেই নামিয়ে ছাড়ে ঢাকা। আসরের একমাত্র অপরাজিত দলটিকে দিল হারের স্বাদ। তাতে আরও একটি দারুণ জয়ে চট্টগ্রাম পর্ব শেষ করল মাহমুদউল্লাহর দল।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ৫০ রানে হারিয়েছে মিনিস্টার ঢাকা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮১ রান করে দলটি। জবাবে ১৫ বল বাকি থাকতেই ১৩১ রানে গুটিয়ে যায় কুমিল্লা।
এদিন দুর্দান্ত এক ইনিংসে অনেক মাইলফলকই স্পর্শ করেছেন ঢাকা অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে পেয়েছেন পাঁচ হাজার রান। এমনকি বিপিএলেও তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে দুই হাজার রানের কোটা স্পর্শ করেছেন তিনি।
আর মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে দিনের প্রথম ম্যাচ বিচারে লক্ষ্যটা বিশালই হয় কুমিল্লার জন্য। সে লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতে খালি হাতে বিদায় নেন লিটন দাস। রুবেল হোসেনের বলে টপ এজ হয়ে ক্যাচ দেন ইমরান উজ্জামানের হাতে। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আগের মচেই ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দেওয়া ফাফ দু প্লেসিও।
তবে তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক ইমরুল কায়েসকে নিয়ে দলের হাল ধরেন তরুণ ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। ইনিংস মেরামত করে স্কোরবোর্ডে ৭০ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটার। ১১তম ওভারে বল হাতে নিয়ে ম্যাচের পরিস্থিতি ফের বদলে দেন ক্যারিবিয়ান তারকা আন্দ্রে রাসেল। সে ওভারে জোড়া ধাক্কা দেন তিনি। ফেরান এ দুই সেট ব্যাটারকে। কার্যত তখনই হার দেখতে শুরু করে কুমিল্লা।
জোড়া উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলাতে না সামলাতে ক্যামেরুন ডেলপোর্টকেও হারায় কুমিল্লা। আরিফুল হকের সঙ্গে ভুল বোঝাবোঝির খেসারৎ দিয়ে রানআউট হন এ প্রোটিয়া ব্যাটার। এরপর অবশ্য করিম জানাতকে নিয়ে কিছুটা চেষ্টা চালান আরিফুল। স্কোরবোর্ডে ২৭ রান যোগ করেন তারা। কিন্তু মাত্র ১৬ রানের ব্যবধানে শেষ ৫ উইকেট হারালে বড় ব্যবধানেই হারতে হয় দলটিকে।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৬ রানের ইনিংস খেলেন মাহমুদুল। ৩০ বলে ৮টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। ২৩ বলে ২৮ রানের ইনিংস খেলেন ইমরুল। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন অধিনায়ক। জানাতের ব্যাট থেকে আসে ১৭ রান।
ঢাকার পক্ষে ১৭ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পান আন্দ্রে রাসেল। ২টি করে উইকেট নেন ইবাদত হোসেন ও কায়েস আহমেদ।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে এদিন মোহাম্মদ শাহজাদকে নিয়ে দলের গোড়াপত্তন করতে নামেন তামিম ইকবাল। তবে জুতসই হয়নি। দলীয় ৭ রানেই ফিরে যান শাহজাদ। মোস্তাফিজুর রহমানের বলে পড়েন এলবিডাব্লিউর ফাঁদে।
এরপর ইমরান উজ্জামানকে দলের হাল ধরেন তামিম। গড়েন ৪৮ রানের জুটি। করিম জানাতের বলে বোল্ড হয়ে যান ইমরান। তার বিদায়ে এ জুটি ভাঙলে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে দলের হাল ধরেন তামিম। স্কোরবোর্ডে ৩০ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটার।
আরও একটি বড় ইনিংসের ইঙ্গিত দিয়ে ফিফটির দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন তামিম। কিন্তু তানভির ইসলামের বলে শর্ট মিডউইকেটে ধরা পড়েন তিনি। ৩৫ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৬ রান করেন তিনি। তামিম আউট হলেও বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় ঢাকা।
এরপর শুভাগত হোম, আন্দ্রে রাসেল, নাঈম ও মাশরাফি বিন মুর্তজাকে নিয়ে দলের ইনিংস বড় করার চেষ্টা চালিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ। ছোট ছোট জুটিতে এগিয়ে যেতে থাকেন তিনি। চতুর্থ উইকেটে ২৫, পঞ্চম উইকেটে ২০, ষষ্ঠ উইকেটে ৩০ ও সপ্তম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ২১ রানের জুটিতে বড় পুঁজিই পায় দলটি।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭০ রানের ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকেছেন মাহমুদউল্লাহ। ৪১ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান অধিনায়ক। সবমিলিয়ে টি-টোয়েন্টিতে ২৭২ ম্যাচে ৫০৪৫ রান এখন মাহমুদউল্লাহর। আর বিপিএলে ২০১৪ রান।
Comments