মিরাজ-চট্টগ্রাম কাণ্ড: 'ছাড় পাবে না কেউই'

দিনভর নাটক। হুট করে অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়ার কারণে অভিমান করে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে আর খেলতে চাইছিলেন না মেহেদী হাসান মিরাজ। এমনকি হোটেল ছেড়েও বেরিয়ে পড়েছিলেন। পরে তাকে বুঝিয়ে ফের নেওয়া হয় হোটেলে। এমনকি বুঝিয়ে শুনিয়ে তার মান ভাঙিয়ে রেখে দেওয়া হয় দলের সঙ্গেও। তবে ঘটনা অংকুরেই সমাপ্ত হতে পারতো। এমন কাণ্ড হওয়ায় দুই পক্ষেরই দোষ দেখছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল।

চট্টগ্রাম পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে ম্যাচের আগে কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই টস করতে আসেন নাঈম ইসলাম। জানান, অধিনায়কত্ব করতে ইচ্ছুক নন মিরাজ। ফ্র্যাঞ্জাইজি থেকে জানানো হয়, চলে যাওয়ার আগে অধিনায়ক পরিবর্তনের কথা জানিয়ে গেছেন কোচ পল নিক্সন। পরে জানা যায়, কোচ এমন কিছু বলে যাননি। যার জেরে আগের দিন হয় নানা কাণ্ড। তবে এমন ঘটনায় দোষী কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না বলেই জানিয়েছেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল চেয়ারম্যান শেখ সোহেল।

'মিরাজেরও এখানে দোষ আছে, ম্যানেজমেন্টেরও দোষ আছে। দুই পক্ষই কিন্তু দোষী সাব্যস্ত হয়। মিরাজও যে কাজটা করেছে এত বড় মাপের খেলোয়াড় হয়ে জাতীয় দলের খেলোয়াড় হয়ে এই টুর্নামেন্টের ভেতরে তার এই ভূমিকাটা রাখা ঠিক ছিল না। তার অপেক্ষা করা উচিত ছিল। যেহেতু আমরা ডিসিপ্লিনারি কমিটি ছিলাম একটু অপেক্ষা করতে পারত। ফ্র্যাঞ্চাইজিরও এখানে সমস্যা আছে। ফ্র্যাঞ্চাইজিকেও ছাড় দেব না। হেয়ারিং হবে কিছুদিনের মধ্যে। দুই পক্ষকে নিয়ে আমরা হেয়ারিং করব। এখানে ফ্র্যাঞ্চাইজিরও ধৈর্য ধরা উচিত ছিল নিজেরা আলাপ করে দুই পক্ষই বোঝাপড়া করে একটা কিছু করতে পারত। এটা এত বড় পর্যায়ে যাওয়ার জিনিস ছিল না।'

প্রায় একই কথা বলেছেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিকও, 'মিরাজ অধিনায়ক হিসেবে প্রতিটি ম্যাচের আগেই বলছিল ও ওপেন করতে চায়। প্রত্যেকটা ফ্র্যাঞ্চাইজিতো জেতার জন্য দল করে। তাদের একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা আছে। অবশ্যই এটা পেশাদার ভাবে হ্যান্ডেল করা উচিত ছিল। ও ওপেনিং কেন চাচ্ছে, ওর মতামত কি। কোচ কী বলে, সহকারী কোচ, কম্পিউটার অ্যানালিস্ট, বোলিং কোচ আছে, দলের ম্যানেজার আছে। সবাই মিলে একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারতো। কিন্তু জিনিসটা এভাবে হওয়াটা কোন ভাবেই কাম্য নয়।''

'ফ্র্যাইঞ্চাজিও যেভাবে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে, মিরাজও যেভাবে জৈব সুরক্ষা বলয় ব্রেক করে বাইরে এসে বিবৃতি দিয়েছে ঠিক কোন ভাবেই এটা কাঙ্ক্ষিত নয়। গভর্নিং কাউন্সিল থেকে আমরা যা করতে পারি, আমরাতো টিম ম্যানেজমেন্টের ভেতর ঢুকতে পারি না।'

দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই শেষ সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান মল্লিক, 'অবশ্যই প্রত্যেককে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। যদি সেটা কেউ না করে ভবিষ্যতে সে খেলোয়াড় হোক অথবা ফ্র্যাঞ্চাইজি, আমরা তাকে বিপিএলে রাখবো না। এটাই আমরা করতে পারি। নয়তো আমরা কোনো শাস্তি দিতে পারি। কিন্তু এটাতো কোন সমাধান নয়। আপনাকে এটা দেখতে হবে বড় করে। টুর্নামেন্টের ইমেজের জন্য এটা কিন্তু হ্যাম্পার হয়। আমরা দুই গ্রুপকেই হেয়ারিংয়ের জন্য ডেকেছি। দুইজনের কথাই শুনবো। কালকে কিন্তু আমরা বলাতেই দুই পক্ষ আলোচনা করে এটা সলভ করেছে।'

মিরাজ শুরুতেই বিসিবিকে বিষয়টি জানালেও ঘটনা এতো দূর পর্যন্ত আগাতো না বলেও মনে করেন মল্লিক, 'আমাদের মিরাজ শুরুতে যে কথা বলেছিল, পরে যে কথা বলেছে সেটার মধ্যে ফারাক ছিলো। পরশুদিন রাতে মিরাজ আমার সাথে যেটা বলেছে, সেখানে সে বলেছে আম্মা অসুস্থ। ও যদি আমাদের ক্লিয়ার করতো, তাহলে আমরা আরও আগেই ইন্টারফেয়ার করতে পারতাম। তাহলে এই মনমানিল্য কিংবা ভুল বোঝাবুঝি আগেই নিরসন করা যেত। এগুলো নিয়েই আমরা ডেকেছি। গত কালকেও আমরা দুই পক্ষকে বলেছি বসে এগুলো সমাধান করতে। সমাধান হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English
caretaker government proposal Bangladesh

Restoration of caretaker system to be proposed

The restoration of the caretaker government and the introduction of a bicameral system in parliament will be among the recommendations to be proposed by the Constitution Reform Commission.

8h ago