বিপিএল অভিষেকে হ্যাটট্রিক করে ম্যাচসেরা মৃত্যুঞ্জয়
১৮ বলে তখন সিলেট সানরাইজার্সের চাই ৪৯ রান। হাতে ৭ উইকেট। খুব কঠিন সমীকরণ হলেও অসম্ভব নয়। সেসময় ১৮তম ওভার করতে গেলেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। তরুণ এই বাঁহাতি পেসার প্রথম দুই বলে হজম করলেন যথাক্রমে ছক্কা ও চার। কিন্তু ঘাবড়ে না গিয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ালেন তিনি। এনামুল হক বিজয়, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও রবি বোপারাকে টানা তিন বলে আউট করে বিপিএলে অভিষেকে হ্যাটট্রিকের মধুর স্বাদ নিলেন তিনি।
চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শনিবারের দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটারদের তাণ্ডবের ভিড়ে আলাদা করে নজর কাড়েন মৃত্যুঞ্জয়। চার ওভার বল করে ৩৩ রানে তিনি নেন ৩ উইকেট। জমজমাট ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দারুণ বোলিংয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন তিনি, গড়েন চলতি বিপিএলে প্রথম হ্যাটট্রিকের নজির।
বিপিএলে হ্যাটট্রিক করা বাংলাদেশের তৃতীয় ও সবমিলিয়ে ষষ্ঠ বোলার মৃত্যুঞ্জয়। ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক এই টি-টোয়েন্টি আসরে তার আগে হ্যাটট্রিক করেন বাংলাদেশের দুজন। তারা হলেন পেসার আল আমিন হোসেন ও স্পিনার আলিস আল ইসলাম।
বিপিএলে প্রথম হ্যাটট্রিকের করেছিলেন পাকিস্তানের সাবেক পেসার মোহাম্মদ সামি। ২০১২ সালে দুরন্ত রাজশাহীর হয়ে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের বিপক্ষে ওই কীর্তি গড়েছিলেন তিনি। এরপর বিদেশি হিসেবে পাকিস্তানের ওয়াহাব রিয়াজ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে রাসেল করেন হ্যাটট্রিক।
লক্ষ্য তাড়ায় ফিফটি তুলে নিয়ে আগ্রাসন বজায় রেখেছিলেন এনামুল। মৃত্যুঞ্জয়ের ঘটনাবহুল ওই ওভারের প্রথম বলে স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা হাঁকানোর পর কভার দিয়ে চার মারেন তিনি। কিন্তু পরের বলে আবার বড় শট খেলতে গিয়ে এনামুল ডেকে আনেন বিপদ। এক্সট্রা কভারে নাসুম আহমেদের তালুবন্দি হন তিনি। তার ব্যাট থেকে আসে ৪৭ বলে ৭৮ রান।
পরিস্থিতির দাবি ছিল উইকেটে গিয়েই মেরে খেলা। সেটা করতে গিয়ে প্রথম বলেই সাজঘরের পথ ধরেন সিলেটের অধিনায়ক মোসাদ্দেক। ব্যাটে-বলে সংযোগ ঠিকমতো না হওয়ায় ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে চলে যায় হাওয়ায় ভাসা বল। সীমানার একটু ভেতরে ক্যাচ নেওয়ার বাকি কাজটা সারেন আফিফ হোসেন।
মোসাদ্দেক শট খেলার সময় প্রান্ত বদল করে ফেলেছিলেন ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার বোপারা। শক্ত সমীকরণ মেলাতে তার দিকেই তাকিয়েছিল সিলেট। তাকেও নিজের ঝুলিতে পুরে চট্টগ্রামের জয় অনেকটাই নিশ্চিত করে হ্যাটট্রিকের উল্লাসে মাতেন মৃত্যুঞ্জয়। ১২ বলে ১৬ রান করে বোপারা হন বোল্ড।
মৃত্যুঞ্জয়ের নজরকাড়া পারফরম্যান্সের রাতে হাই-স্কোরিং লড়াইয়ে ১৬ রানে জিতেছে স্বাগতিক চট্টগ্রাম। নির্ধারিত ২০ ওভারে তাদের ৫ উইকেটে ২০২ রানের জবাবে সিলেট পুরো ওভার খেলে পৌঁছাতে পারে ৬ উইকেটে ১৮৬ রান পর্যন্ত।
Comments