সিডনির কনস্যুলেট জেনারেল যেন এক ছোট বাংলাদেশ
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের রাজধানী সিডনিতে সব চেয়ে বেশি বাংলাদেশির বাস। প্রায় ৩০ হাজার বাংলাদেশি এই বাণিজ্য নগরীতে গড়ে তুলেছে এক কর্মমুখর কমিউনিটি।
পাসপোর্টবিষয়ক কাজে এক সময় সিডনি প্রবাসীদের যেতে হতো ৩০০ কিলোমিটার দূরের শহর ক্যানবেরায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে। এতো দূরের শহর বলেই রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানগুলোতে বাংলাদেশিদের উপস্থিতি থাকতো খুবই কম। নানা দিক বিবেচনায় ২০০০ সালে সিডনিতে খোলা হয় বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল।
সিডনিতে কনস্যুলেট জেনারেল খোলার মূল লক্ষ্য ছিল প্রবাসী বাংলাদেশিদের উন্নত ও আরও সহজযোগ্য পরিষেবা প্রদান। পাশাপাশি বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে বিদ্যমান উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সহযোগিতা জোরদার করা।
ক্যানবেরায় হাইকমিশনের বিরুদ্ধে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অজস্র অভিযোগ আর ক্ষোভ থকলেও সিডনি কনস্যুলেট জেনারেল নিয়ে তারা সন্তুষ্ট। এখানের প্রায় সব কর্মকর্তাই নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন প্রবাসীদের সেবায়।
কনসাল জেনারেল খন্দকার মাসুদুল আলম জানালেন, 'আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি প্রবাসীবান্ধব হতে। সিডনিতে কনস্যুলেট জেনারেল খোলাই হয়েছে এখানের কমিউনিটির সুবিধার জন্য। আমরা তা মাথায় রেখেই কাজ করছি।'
কনস্যুলেট জেনারেল আয়োজিত রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানগুলোয় কমিউনিটির অনেক গুণীজন ও প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আমন্ত্রণ জানানো হয় না বলে অভিযোগ আছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমরা চেষ্টা করি প্রতিটি সংগঠনের প্রধানদের আমন্ত্রণ জানাতে। ভবিষ্যতে আমরা কমিউনিটির নানা ক্ষেত্রে অবদান রাখা বিশিষ্টজনদেরও সম্পৃক্ত করবো।'
কনসাল আশফাক হোসেন আরও বলেন, 'প্রায় ২ বছর পর আন্তর্জাতিক সীমান্ত খোলার কারণে প্রচুর সংখ্যক বাংলাদেশি দেশে যাচ্ছেন। তাই আমাদের কাজের চাপও বেড়েছে। আমরা চেষ্টা করছি, জরুরি ও দ্রুত সবাইকে তাদের চাহিদা মতো সেবা দিতে।'
কনস্যুলেট জেনারেলের প্রতিটি দেয়ালে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা আন্দোলনসহ চিরায়ত বাংলার শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির নিদর্শন শোভা পাচ্ছে।
সিডনির কনস্যুলেট জেনারেল প্রবাসের মাটিতে যেন আরেকটি ছোট বাংলাদেশ।
আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
Comments