কুয়েট শিক্ষক সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে কমিটির প্রধান ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের অধ্যাপক মহিউদ্দিন আহমাদসহ পাঁচ সদস্য উপাচার্যের কার্যালয়ে ৪৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. আনিছুর রহমান ভূঞা বলেন, কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে কী আছে আমরা এখনো পড়ে দেখিনি। পরবর্তী করণীয় নিয়ে আলোচনা চলছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান ইইই বিভাগের অধ্যাপক মহিউদ্দিন আহমাদ বলেন, 'প্রতিবেদনে কমিটির পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রভাবমুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পেরেছি। শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমরা ডেকেছি। সবকিছু শুনে এবং তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করেছি।'
গত ৩০ নভেম্বর ইইই বিভাগের অধ্যাপক ও লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ সেলিম হোসেন ক্যাম্পাসের পাশে ভাড়া বাসায় মারা যান। অভিযোগ ওঠে, মৃত্যুর দিন দুপুরে বাসায় ফেরার পথে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অধ্যাপক সেলিমকে বিভাগে তার কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তার ওপর মানসিক নিপীড়ন চালানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বলছে, এটি হত্যাকাণ্ড।
ঘটনাটি তদন্ত করতে সেদিনই তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কুয়েট কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে বলা হয়।
তদন্ত কমিটির দুজন সদস্য অপারগতা জানালে সে দিনই পাঁচ সদস্যের আরেকটি নতুন কমিটি গঠন করা হয়। বাতিল করা হয় প্রথম তদন্ত কমিটি। দ্বিতীয় কমিটিতে ইইই বিভাগের অধ্যাপক মহিউদ্দিন আহমাদকে সভাপতি ও গণিত বিভাগের অধ্যাপক মো. আলহাজ উদ্দীনকে সদস্যসচিব করা হয়। নতুন কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
সিন্ডিকেট সভায় ক্যাম্পাস বন্ধের সময়সীমা প্রথম দফায় ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরে ২৩ ডিসেম্বর রাতে সিন্ডিকেট সভায় ছুটির মেয়াদ আরও এক দফা বাড়ানো হয়। সভায় ৭ জানুয়ারি হল খুলে ৯ জানুয়ারি ক্লাস শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়।
কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রতীক চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, 'অধ্যাপক সেলিমের মৃত্যুর পর আমরা পাঁচ দফা দাবি করেছিলাম। তার মধ্যে একটা দাবি ছিল সন্দেহভাজন জড়িতদের সাময়িক বহিষ্কার করা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেটা করেছে। আমরা আমাদের আগের অবস্থানে এখনো আছি। আর তদন্ত প্রতিবেদন তো সিলগালা অবস্থায় প্রশাসনের কাছে যাবে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটিকে শৃঙ্খলা কমিটিতে তুলে কিছু প্রক্রিয়া শেষ করে তারপর সিন্ডিকেটে তুলবে। সিন্ডিকেট থেকে সিদ্ধান্ত হওয়ার পর আমরা সবকিছু জানতে পারব। এরপর আমরা সাধারণ সভা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।'
Comments