যেখানে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া, যেখানে নিউজিল্যান্ড

Aaron Finch & kane williamson
কার্টুন: অসিম/স্টার

সাম্প্রতিক ফর্ম, চলতি বিশ্বকাপের পথচলায় দুই দলকেই রাখতে হবে সমান মাপকাঠিতে। তবু খেলার ধরণ, দক্ষতার ভিন্নতা মিলিয়ে ব্যবধান গড়ে দেওয়ার মতো উপকরণ অনেক। শেষ লড়াইয়ে কার জয় হবে তা দেখা যাবে আর কয়েক ঘণ্টা পরই। তার আগে দেখে নেওয়া যাক দু'দলের কিছু শক্তি-দুর্বলতা, সংকট-সম্ভাবনা।

ওপেনিংয়ে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া

এবার বিশ্বকাপের আগে ডেভিড ওয়ার্নার ফর্ম না থাকায় ওপেনিং নিয়ে অস্বস্তিতে ছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু আসল সময়েই দারুণ ছন্দ ফিরে পান পরীক্ষিত ওয়ার্নার। ২৩৬ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হওয়ার দৌঁড়েও আছেন তিনি। তার সঙ্গী অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ কোন ফিফটি না করলেও ১৩০ রান করে জুতসই পারফরম্যান্স ভরসা দিচ্ছেন।

martin guptill & daryl mitchell
মার্টিন গাপটিলের সঙ্গে ড্যারেল মিচলের জুটিও বিশ্বকাপের চমক

এই জায়গায় খুব পিছিয়ে নেই নিউজিল্যান্ড। এবারই প্রথম ড্যারেল মিচেলকে ওপেনিংয়ে নামিয়ে বাজিমাত করে তারা। মেইকশিফট এই ওপেনারই হয়ে উঠেছেন মূল ভরসা। সেমি-ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারাতে তার ৪৭ বলে ৭২ রানের ইনিংস রেখেছে বড় ভূমিকা। তার ব্যাট থেকে এসেছে ছয় ম্যাচে ১৯৭ রান। দলের মূল ওপেনার মার্টিন গাপটিল স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৯৩ রানের একটা ইনিংস খেলেছিলেন। বাকি ম্যাচগুলোতে বড় রান নেই তার। থিতু হয়ে ইনিংস টানতে পারেননি। গাপটিলের কাছ থেকে বড় ম্যাচে বিশেষ কিছুর অপেক্ষায় থাকবে কিউইরা। তবে আপাতত যা অবস্থা তাতে ওয়ার্নার-ফিঞ্চ জুটিকেই খানিকটা এগিয়ে রাখতে  হবে।

মিডল অর্ডারে কনওয়েকে হারানোয় পাল্লা সমান

গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতে চার নম্বরে নেমে কার্যকর ব্যাট করতে দেখা যাচ্ছিলেন ডেভন কনওয়েকে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিতে ৪৬ রান করে আউট হওয়ার হতাশায় ব্যাটে হাত দিয়ে আঘাত করে হাত ভেঙ্গে ছিটকে গেছেন তিনি। এই জায়গায় বড় ধাক্কা খেয়েছে নিউজিল্যান্ড।

কনওয়ে থাকলে বিশ্বকাপের ছন্দ বিবেচনায় এগিয়ে রাখা যেত কিউইদের। কারণ অস্ট্রেলিয়ার তিন -চারে নামা স্টিভেন স্মিথ আর গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এখনো আছেন নিজেদের ছায়া হয়ে। কনওয়ে না থাকায় একাদশে আসবেন টিম সেইফার্ট। কেইন উইলিয়ামসনের পাশাপাশি তিনি কেমন করেন তাতে তৈরি হতে পারে ব্যবধান।

ফিনিশিংয়ে সমান-সমান টক্কর

ফিনিংশিয়ে দু'দলকে বড় পরীক্ষায় পড়তে হয়েছিল সেমিতে। তাতে দু'দলই লেটার মার্কস পেয়ে উত্তীর্ণ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ জিততে শেষ ৪ ওভারে নিউজিল্যান্ডের লাগত ৫৭ রান। জিমি নিশাম, ড্যারেল মিচেল মিলে সেই সমীকরণ এক ওভার আগেই মিলিয়ে দেন। পাকিস্তানের বিপক্ষেও ম্যাচ জিততে সেমিতে অস্ট্রেলিয়ার সমীকরণ ছিল কাছাকাছি। শেষ ৪ ওভারে লাগত ৫৪ রান। মার্কাস স্টয়নিস-ম্যাথু ওয়েডের ব্যাটে এক ওভার আগে জিতে তারাও। টুর্নামেন্টের সবচেয়ে আলোচিত পেসার শাহীন আফ্রিদিকে টানা তিন ছয়ে খেলা শেষ করে নিজের ভিন্ন এক পরিচয় সামনে আনেন ওয়েড। ম্যাচের উত্তেজক মুহূর্তে তাই স্নায়ু চাপে জয়ী দুই দলই। ফাইনালে এই জায়গায় কাদের পারফরম্যান্স ভালো হবে কৌতূহলের বিষয়।

ট্রেন্ট বোল্ট নাকি মিচেল স্টার্ক, কে দেখাবেন পেসের ঝাঁজ?

নিউজিল্যান্ডের পেস আক্রমণই বেশি ধারালো

একদিকে মিচেল স্টার্ক-জশ হ্যাজেলউড-প্যাট কামিন্স। আরেক দিকে ট্রেন্ট বোল্ট-টিম সাউদি-অ্যডাম মিলনে। নামে-ভারে অস্ট্রেলিয়ার পেস আক্রমণকে অনেকে এগিয়ে রাখতে পারেন। কিন্তু বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স বলছে নিউজিল্যান্ডের কথাই।

এবার বিশ্বকাপে বোল্ট আর সাউদি মিলে নিয়েছেন ১৯ উইকেট। সুপার টুয়েলভে উইকেট নেওয়ায় অ্যাডাম জাম্পার পরেই ১১ উইকেট নিয়ে আছেন বোল্ট। শুধুন উইকেটই নয় এই দুই পেসারের বল থেকে খুব বেশি রানও উঠাতে পারছেন না ব্যাটাররা। ওভারপ্রতি ছয়ের কিছু বেশি রান দিচ্ছেন তারা।

অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক ৮ উইকেট নিলেও ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৮ এর বেশি। হ্যাজেলউড শুরুতে ভাল করলেও ছন্দ ধরে রাখতে পারেননি। কামিন্সকে একদমই ধারালো লাগছে না।

বোল্ট শুরুতে কাঁপন ধরাচ্ছেন, ডেথ ওভারেও তোপ দাগছেন। সাউদিকে দেখা যাচ্ছেন মাঝের ওভারে এসে ব্রেক থ্রো নিতে। পেস আক্রমণে তাই কিউইরাই এগিয়ে থাকবে।

দুই লেগ স্পিনারের তুমুল লড়াই গড়তে পারে ব্যবধান

বাংলাদেশের বিপক্ষে একটি ৫ উইকেটসহ ১২ উইকেট নিয়ে সুপার টুয়েলভে সেরা অজি লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা। সেমিফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে দলের বাকিরা মার খেলেও জাম্পা ছিলেন দারুণ। কেবল ১২ উইকেটই নয়, জাম্পা রানও দেননি। পুরো বিশ্বকাপে তার ইকোনমি ওভার প্রতি ৫.৬৯!

খুব বেশি পিছিয়ে নেই ইশ সোধি। ৬ ম্যাচে নিয়েছেন ৯ উইকেট। ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৭.১১ করে। পাকিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ২৮ রানে নিয়েছিলেন ২ উইকেট। ভারতের বিপক্ষে তাকে পাওয়া যায় সেরা অবস্থায়। রোহিত শর্মাদের কাবু করে মাত্র ১৭ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। বড় মঞ্চে তাই সোধির জ্বলে উঠা খুবই প্রত্যাশিত।

এই জায়গায় জাম্পা কিছুটা এগিয়ে থাকবেন। তবে শেষ পর্যন্ত দুই লেগ স্পিনারের কে ফাইনালে বেশি ভাল করবেন তার উপরই নির্ভর করতে পারে ম্যাচের ভাগ্য।

 

 

 

Comments

The Daily Star  | English

Confronting Dhaka’s battery-run rickshaw dilemma

One of the more recent manifestations of informal urban expansion is the proliferation of battery-run rickshaws.

6h ago