৬ মাস ধরে বিকল আমতলী উপজেলা হাসপাতালের পানির পাম্প
বরগুনার আমতলী উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের পানি সরবরাহের প্রধান পাম্পটি ৬ মাস ধরে বিকল। এতে করে দুর্ভোগে পড়েছেন হাসপাতালের রোগী, চিকিৎসক, নার্সসহ আবাসিক ভবনে বসবাসরত অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, পানি সরবরাহের প্রধান পাম্পটি গত ২ এপ্রিল বিকল হয়ে যায়। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মুনয়েম সাদ গত ১২ এপ্রিল হাসপাতালের মসজিদের গভীর নলকূপের সঙ্গে একটি বিকল্প সংযোগ দিয়ে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য।
হাসপাতালটিতে প্রতিদিন প্রায় শতাধিক রোগী ভর্তি থাকছেন। সরবরাহকৃত সামান্য পানিতে তাদের গোসল, টয়লেটসহ অন্যান্য প্রয়োজন মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে রোগী ও রোগীর স্বজনরা হাসপাতালের বাইরে থেকে বালতিতে ভরে পানি আনছেন।
হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য রয়েছে ৪টি আবাসিক ভবন। এসব ভবনে বসবাসরতদেরও পানির অভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
হাসপাতালের ভর্তি বৈঠাকাটা গ্রামের চন্দ্র ভানু বলেন, 'পানির অভাবে ঠিকমত গোসল ও কাপড়-চোপড় ধোয়া যায় না।'
একই অভিযোগ পশ্চিম চিলা গ্রামের রোগী মশিউর রহমানেরও।
গতকাল শুক্রবার সরেজমিন হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, পানির অভাবে রোগী ও তাদের সঙ্গে থাকা স্বজনরা ঠিকমত গোসল ও টয়লেট ব্যবহার করতে পারছেন না। পানি কম ব্যবহার করায় টয়লেট থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
হাসপাতালটিতে করোনার টিকা নিতে প্রতিদিন আসছেন কয়েকশ মানুষ। পানির অভাবে তারাও ব্যবহার করতে পারছেন না টয়লেট।
হাসপাতালের আবাসিক ভবনে বসবাসরত নার্স রেবা বেগম বলেন, 'পানির পাম্প নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আমরা প্রয়োজনীয় পানি পাই না। বিকল্প ভাবে যেটুকু পানি সরবরাহ করা হয়, তা দিয়ে সংসারের রান্না, ধোয়া-মোছাসহ সব কাজ করা সম্ভব হয় না।'
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পটুয়াখালীর উপসহকারী প্রকৌশলী দেবব্রত হালদার বলেন, 'আমতলী উপজেলায় পানির স্তর নীচে নেমে যাওয়ায় পুরাতন পাম্পে পানি উঠছে না। তাই আমতলী হাসপাতালের পানি সমস্যা সমাধানের জন্য একটি নতুন পাম্প বসানোর চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন ও বরাদ্দ পেলে নতুন পাম্প বসানোর কাজ শুরু হবে।'
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবদুল মুনয়েম সাদ বলেন, 'হাসপাতালে ৬ মাস ধরে পানি তোলার পাম্পটি নষ্ট হওয়ায় পানির সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করছে। বিষয়টি একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু এখনও সমাধান হয়নি।'
বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান বলেন, 'পাম্পের সমস্যার বিষয়ে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।'
Comments