অপরিকল্পিত সেতুর জন্য পাহাড় কাটছে এলজিইডি
বান্দরবানের রুমা উপজেলায় অপরিকল্পিত একটি সেতুর জন্য পাহাড় কাটছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। সংযোগ সড়ক ছাড়াই এলজিইডি গত জুন মাসে সেতুটি তৈরির কাজ শেষ করেছে।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুস সাদাত মো. জিল্লুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে দুর্গম পলিকা খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু সেতুটি ব্যবহারে কোনো সংযোগ সড়ক ছিল না। এখন পাহাড় কেটে সংযোগ সড়ক তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে।'
ওই প্রকৌশলী জানান, নতুন তৈরি সেতু হয়ে রুমা মুখ থেকে উপজেলার গ্যালেংগা পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে প্রায় ৪২ কোটি টাকার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম পরিবেশ বিভাগের সহকারী পরিচালক শ্রীরুপ মজুমদার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এলজিইডি সম্প্রতি বান্দরবানের দুর্গম রুমা উপজেলায় রাস্তা নির্মাণের জন্য পাহাড় কাটার জন্য আবেদন করেছিল। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে তাদের এখনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি। কিন্তু তারা এর মধ্যেই পাহাড় কাটা শুরু করেছে।'
'আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাব', তিনি বলেন।
রুমা মুখ থেকে গ্যালেংগায় যাতায়াতে স্থানীয়রা সাঙ্গু নদী ব্যবহার করেন। শুকনো মৌসুমে জলপথ বন্ধ হয়ে গেলে নদীর পাড় দিয়ে তারা চলাচল করেন। নতুন সেতু ও সড়কের ব্যাপারে স্থানীয়রা বলছেন, পাহাড় কাটা ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয় এমন কিছু তারা চান না।
স্থানীয় রুম ক্লাম ম্রো ডেইলি স্টারকে বলেন, আমরা পাহাড় ধ্বংস করে রাস্তা চাই না।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান গত রোববার নবনির্মিত সেতুটি পরিদর্শনে যান। তিনি আজ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সেতুটির পাশে একটি পাহাড় আছে। সেখানে কোনো রাস্তা নেই। কিন্তু সেতুটি অপরিকল্পিত ছিল না।'
তিনি বলেন, 'পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়ন করতে গেলে পাহাড় তো কাটতেই হবে।'
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পাহাড় কাটার ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য এবং জীববৈচিত্র্য নষ্ট হয়। পাহাড় কেটে রাস্তা করার ফলে মাটির গাঁথুনির ক্ষতি হয়। এর ফলে ভূমিধসের সম্ভাবনা বাড়ে।'
Comments