ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে গৃহহীন শত শত পরিবার
ব্রহ্মপুত্র নদের অনবরত ভাঙনে বসতভিটা ও আবাদি জমি হারিয়ে ভূমিহীন ও গৃহহীন হচ্ছে শত শত পরিবার।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, রৌমারী উপজেলার যাদুর চর, শোলমারী ও চর শোলমারী এবং চর রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি ও মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের ১৪টি স্থানে চলছে ভাঙন।
রৌমারী উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল্লাহ ও রাজিবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আকবর হোসেন হিরো জানান, গত এক সপ্তাহেই কুড়িগ্রামের রৌমারী ও চর রাজিবপুর উপজেলায় ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়েছে অন্তত দেড় শতাধিক পরিবার।
ভাঙনের শিকার রৌমারী উপজেলার যাদুর চর ইউনিয়নের ধনার চর গ্রামের ৯০ বছর বয়সী আব্দুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জীবনে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে কতবার যে বসতভিটা হারিয়েছি তার হিসাব নেই। গত এক সপ্তাহে আমার বসতভিটার অর্ধেক ব্রহ্মপুত্রের উদরে চলে গেছে। ঝুঁকি নিয়েই ভাঙন কবলিত বসতভিটায় রয়েছি পরিবার নিয়ে। বাকি বসতভিটাটুকুও যেকোনো সময় বিলীন হয়ে যেতে পারে। তারপর কোথায় যাব জানি না।'
তিনি আরও বলেন, 'আমার ২০ বিঘা আবাদি জমি ছিল। কিন্তু, কিছুই নেই। সব চলে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদে।'
ধনার চর গ্রামের আমজাদ হোসেন (৬০) বলেন, 'ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছি এক আত্মীয়র বাড়িতে। জমি কিনে বসতভিটা করার সামর্থ্য আমার নেই। ব্রহ্মপুত্রে আবাদি জমি ও বসতভিটা হারিয়ে আমি এখন ভূমিহীন ও গৃহহীন।'
একই গ্রামের আবু জাফর (৬৮) বলেন, 'গ্রামের মসজিদের অর্ধেকই চলে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদে। বাকি অর্ধেকে এক চালা টিনের ঘর তুলে আমরা নামাজ পড়ছি। যেকোনো মুহূর্তে মসজিদটি নদের ভাঙনে বিলীন হয়ে যেতে পারে।'
চর রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি গ্রামের আব্দুল হামিদ (৬৫) জানান, তার বসতভিটার ৭০ শতাংশ ভেঙে গেছে। স্থানীয়দের সহায়তায় ঘর সরিয়ে সরকারি রাস্তার ওপর রেখেছেন। ভাঙনে সব হারিয়ে তিনি এখন ভূমিহীন, গৃহহীন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রাথমিকভাবে ভাঙন ঠেকাতে ভাঙন কবলিত স্থানে জিও ব্যাগ ফেলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বর্ষা মৌসুমের পর গুরুত্ব বিবেচনায় কয়েকটি ভাঙন কবলিত স্থানে স্থায়ীভাবে ভাঙন ঠেকাতে কাজ করা হবে।'
Comments