বাড়ছে করোনা রোগী, সদর হাসপাতালে বন্ধ হতে পারে সাধারণ রোগী ভর্তি
শরীয়তপুর করোনার সংক্রমণ ও রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। ফলে, জেলা সদর হাসপাতালে বাড়ছে করোনা রোগীর চাপ। চাপ সামলাতে এই হাসপাতালে যে কোনো সময় বন্ধ হতে পারে সাধারণ রোগী ভর্তি।
আজ সোমবার শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মুনির আহমেদ খান দ্য ডেইলি এসব তথ্য জানিয়েছেন।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে সরেজমিনে দেখা যায়, করোনা উপসর্গ নিয়ে যারা ভর্তি হচ্ছেন তাদের অধিকাংশ সাধারণ বেড পাচ্ছেন না। অনেক রোগীকে সাধারণ ওয়ার্ডের বারান্দায় ও মেঝেতে অক্সিজেন মাস্ক পরিহিত অবস্থায় দেখা গেছে। তাদের কারো কারো করোনার উপসর্গ ছিল।
এখানে করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি আছেন শরীয়তপুর সদর পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের একটি বেসরকারি ক্লিনিকের স্টাফ আসমা বেগম। করোনা উপসর্গ থাকায় সাধারণ বেডে তার জায়গা হয়নি।
তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি গতকাল করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। আমার শ্বাসকষ্ট, কাশি এবং জ্বর আছে। শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ায় সদর হাসপাতাল থেকে আমাকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, আমি সাধারণ বেডের আবেদন করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমকে সাধারণ বেড দেননি। আমি করোনার নমুনা দিয়েছি, পরীক্ষার পর জানতে পারব আমার করোনা হয়েছে কিনা।'
এ বিষয়ে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মুনির আহমেদ খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সদর হাসপাতালে ১২ জন করোনা রোগী ভর্তি আছেন এবং আরও ২৪ জন করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি আছেন। এছাড়া, আজ শরীয়তপুরে করোনায় সর্বোচ্চ ১৩১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। দিন দিন আমাদের করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। তাই যারা করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন তাদের চাইলেও আমরা সাধারণ বেডের রোগীদের সঙ্গে রাখতে পারছি না। এতে সাধারণ বেডের রোগীদের করোনা সংক্রমণের ভয় থাকে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের অতিরিক্ত বেড না থাকায় তাদের হাসপাতালের বারান্দার ও মেঝেতে জায়গা করে দিতে হচ্ছে। সিভিল সার্জন এবং জেলা প্রশাসক মহোদয়কে বিষয়টি অবহিত করেছি। এভাবে যদি করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে, তাহলে আমরা যে কোনো সময় নন-কোভিড অর্থাৎ সাধারণ রোগী ভর্তি করা বন্ধ করে দেব।'
শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন ডা. এস. এম আব্দুল্লাহ আল মুরাদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'করোনা রোগী বেড়ে গেলে আমাদের বাধ্য হয়েই সাধারণ রোগী ভর্তি করা বন্ধ করে দিতে হতে পারে। কারণ তখন করোনা রোগীর বেড সংখ্যা বাড়াতে হবে। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন উপজেলা থেকে যেসব সাধারণ রোগী জেলা সদর হাসপাতাল চিকিৎসা নিতে আসেন, তাদের সেসব উপজেলার হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।'
এদিকে, শরীয়তপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৬৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং শনাক্তের হার ৪৯ দশমিক ৮০ শতাংশ। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় একজন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১২২ জনে।
Comments