ব্যবস্থা থাকার পরও করোনা রোগীদের অন্য হাসপাতালে পাঠানোর অভিযোগ
করোনা রোগীদের চিকিৎসায় ভোলা জেনারেল হাসপাতালে সব রকমের ব্যবস্থা থাকার পরেও রোগীদের অন্য হাসপাতালে রেফার্ড করার অভিযোগ উঠেছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, আইসিইউ এবং হাই ন্যাজাল ফ্লো ক্যানুলা থাকলেও এগুলো পরিচালনা করার মতো প্রশিক্ষিত চিকিৎসক নেই।
ভোলা জেনারেল হাসপাতালে কোভিড সংক্রমণ নিয়ে গত ১৮ জুলাই ভর্তি হন ষাট বছর বয়সী মরিয়ম বেগম। অক্সিজেনসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়ার পরেও তার অক্সিজেন স্যাচুরেশন পঁচাত্তরে নেমে আসে। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ এই অবস্থায় চিকিৎসকরা রোগীকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল অথবা ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা দিতে বলেন। বাধ্য হয়ে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে দুপুর একটার দিকে হাসপাতাল ছেড়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে যান। কিন্তু বিকেল ৪টা পর্যন্ত তারা ওই হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেননি। টানাহেঁচড়ায় রোগীর শ্বাসকষ্ট বেড়েছে বলে জানান স্বজনেরা।
মরিয়ম বেগমের ছেলে সবুজ জানান, এই হাসপাতালেই আইসিইউ ও হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা ও সেন্ট্রাল অক্সিজেন থাকার পরও তাদেরকে বরিশালে রেফার করা হয়েছে। এতে রোগীর অবস্থা খারাপ হয়েছে।
'একই রকম চিকিৎসা সত্ত্বেও আমরা কেন হাসপাতাল বদল করব-প্রশ্ন সবুজের।
শুধু মরিয়ম বেগম নন আয়েশা খাতুন নামে আরেক রোগী কোভিড সংক্রমণ নিয়ে এক সপ্তাহ আগে এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার স্বজনেরাও অভিযোগ করেছেন, কোনো কারণ ছাড়াই তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে ভোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে প্রায়ই চিকিৎসা সম্ভব এমন রোগীদেরও বরিশালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়ে থাকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ড. সিরাজুদ্দিন জানান এখানে মোট ছয়টি আইসিইউ ও সাতটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা রয়েছে। তবে এগুলো চালানোর মতো কোনো ডাক্তার নেই। তিন জন নার্স কয়েক দিনের প্রশিক্ষণ পেয়েছে মাত্র।
তিনি জানান, অনেক সময় যে সব রোগী খুব গুরুতর পর্যায়ে চলে যায় এবং যাদের স্বজন কোনো কিছু ঘটলে মেনে নিতে চাইবেন না তাদের আমরা রেফার করে থাকি। স্থানীয় পর্যায়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতেই এমনটা করা হয়।
এ নিয়ে বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক ড. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল অবশ্য বলেন, এখন উপজেলা ও জেলা থেকে সাধরণত কোনো রোগী বিভাগীয় শহরে পাঠানো হয় না তারপরেও ব্যতিক্রম হতে পারে।
তিনি জানান, ভোলা জেলা সদরেই এখন সব কোভিড রোগীদের চিকিৎসা সম্ভব। বর্তমানে অধিকাংশ রোগীই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।
Comments