ফিলিপাইনে বাণিজ্যিক চাষের অনুমোদন পেল ‘গোল্ডেন রাইস’

ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় গোল্ডেন রাইস উৎপাদনের পরীক্ষাগার। ছবি: সংগৃহীত

জিনগত পরিবর্তনের (জেনেটিক্যালি মডিফায়েড) মাধ্যমে উদ্ভাবিত ধানের জাত গোল্ডেন রাইসের বাণিজ্যিক চাষাবাদের অনুমোদন দিয়েছে ফিলিপাইন সরকারের কৃষি বিভাগ।

এর ফলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে কৃষক পর্যায়ে গোল্ডেন রাইসের চাষাবাদ ও তা ব্যবহারের ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা থাকল না। নতুন জাতের এই ধানটি ভিটামিন এ- এর উৎস বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ।

আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ইরি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এর আগে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে মানুষ ও প্রাণীর খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের জন্য নিরাপদ হিসেবে গোল্ডেন রাইসকে অনুমোদন দেয় ফিলিপাইনের কৃষি বিভাগ। অনুমোদন পাওয়ার পর ফিলিপাইনের জাতীয় ধান গবেষণা সংস্থা ফিলরাইস গোল্ডেন রাইসের সেনসরি ইভ্যালুয়েশন বিষয়ক গবেষণা শুরু করে। গবেষণা শেষে বাণিজ্যিক চাষাবাদের অনুমোদন চেয়ে আবেদনের পর গতকাল বৃহস্পতিবার ফিলরাইস এই অনুমোদন পায়।

এ ছাড়া গোল্ডেন রাইস যেহেতু একটি জেনেটিক্যালি মডিফাইড শস্য, তাই ফিলিপাইনের আইন অনুসারে বাণিজ্যিক ব্যবহারের অনুমোদন পাওয়ার আগে এটাকে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত ছাড়পত্রও পেতে হয়েছে।

বাংলাদেশেও গোল্ডেন রাইসের পরিবেশগত ছাড়পত্রের আবেদনটি দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বিবেচনাধীন আছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২০১৭ সালের শেষ দিকে এই আবেদন করেছিল বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)।

কয়েক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক ছাড়পত্র পেয়েছিলো গোল্ডেন রাইস। তবে গোল্ডেন রাইসের বাণিজ্যিক ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া প্রথম দেশ হচ্ছে ফিলিপাইন।

বাণিজ্যিক চাষাবাদের অনুমোদন পাওয়ায় ফিলরাইসকে অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবীর বলেন, 'ভিটামিন এ ঘাটতির বিরুদ্ধে আমাদের যে লড়াই, তাতে এই অনুমোদনটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। শুধু ফিলিপাইন নয়, বাংলাদেশের জন্যও।'

শাহজাহান কবীর আরও বলেন, 'আমরা আশা করি ফিলিপাইনের মতো বাংলাদেশ সরকারও গোল্ডেন রাইসকে পরিবেশগত ছাড়পত্র দেবে।'

ফিলিপাইনে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন শিশু ভিটামিন এ-র ঘাটতির শিকার। বিশেষ করে দরিদ্র পরিবারগুলোতে এটা বেশি দেখা যায়। এছাড়া বিশ্বে অন্তত ১৯ কোটি শিশু ভিটামিন এ'র ঘাটতিজনিত বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগে।  যেমন অন্ধত্ব ও দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা।

চালের রঙ সাধারণত সাদা হলেও গোল্ডেন রাইসের রঙ হয়ে থাকে হলদে-সোনালি। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিআর-২৯ জাতের ধানের সঙ্গে ভুট্টার জিন মিলিয়ে গোল্ডেন রাইসের জাতটি উদ্ভাবন করা হয়েছে।

অবশ্য পরিবেশ কর্মীসহ বাংলাদেশের কিছু বেসরকারি সংস্থা দেশে গোল্ডেন রাইসের বাণিজ্যিক চাষাবাদের অনুমোদন দেওয়ার ব্যাপারে বিরোধিতা করে আসছেন। তাদের ভাষ্য, এমন জিএম (জেনেটিক্যালি মডিফায়েড) ফসল বাংলাদেশের পরিবেশ ও মানুষের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

Public admin reforms: Cluster system may be proposed for ministries

The Public Administration Reform Commission is likely to recommend reducing the number of ministries and divisions to 30 from 55 to improve coordination and slash the government’s operational cost.

7h ago