কিউবার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের

এটা সবে শুরু: বাইডেন
যুক্তরাষ্ট্রের সংসদ সদস্য ও কিউবান-আমেরিকান সম্প্রদায় আন্দোলনকারীদের প্রতি আরও বেশি সহযোগিতামূলক আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছে। ছবি: এপি

নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে জো বাইডেন প্রশাসন নিশ্চিত করেছে, অদূর ভবিষ্যতে কিউবার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব নমনীয় হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র গত বৃহস্পতিবার কিউবার একজন জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ব্রিগেডের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এ মাসের শুরুর দিকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া আন্দোলনকারীদের ওপর অভিযান চালানোর ফলশ্রুতিতে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় বলে জানিয়েছে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ।

কিউবা সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করার জন্য জো বাইডেন প্রশাসন এবারই প্রথম একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সংসদ সদস্য ও কিউবান-আমেরিকান সম্প্রদায় আন্দোলনকারীদের প্রতি আরও বেশি সহযোগিতামূলক আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছে।

বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'এটা সবে শুরু। কিউবার জনগণদের শোষণের সঙ্গে জড়িত সব ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কাজটি অব্যাহত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র।'

বাইডেন তার বক্তব্যে কিউবার প্রতিবাদী জনগণের কণ্ঠকে রুদ্ধ করার জন্য ঢালাওভাবে আটক ও তাদেরকে প্রহসনমূলক বিচারের মাধ্যমে হাজতে পাঠানোর প্রক্রিয়ার প্রতি নিন্দা জানান।

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ কিউবার ৭৮ বছর বয়সী নিরাপত্তা কর্মকর্তা আলভারো লোপেজ মেইরা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সেনাদলকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে।

কিউবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রড্রিগেজ এক টুইটার বার্তায় এই নিষেধাজ্ঞাকে নাকচ করে এটিকে 'ভিত্তিহীন ও নিন্দনীয়' একটি কাজ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি নিজেদের 'প্রতিদিনের দমন প্রক্রিয়া ও নীতিমালার মাধ্যমে বর্বরতা' সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। 

এক সপ্তাহ আগে কিউবার হাজারো নাগরিক দেশটির চলমান অর্থনৈতিক সংকটের বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিবাদ জানান। বর্তমান সংকটের ফলশ্রুতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের স্বল্পতা ও লোডশেডিংয়ের ঘটনা বেড়ে গেছে। আন্দোলনকারীরা একইসঙ্গে সরকারের করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা ও নাগরিক স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার বিষয়গুলো নিয়েও প্রতিবাদ জানান।

বাইডেন ২০২০ সালে নির্বাচনী প্রচারণার সময় আশ্বাস দিয়েছিলেন ট্রাম্প সরকারের কিউবাবিরোধী কিছু নীতিমালার সংশোধন করার, কিন্তু বৃহস্পতিবারের ঘোষণা এই প্রতিশ্রুতির বিপরীতে গেছে।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রেমিট্যান্স প্রবাহের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিলেন, যেটির আনুমানিক মূল্যমান বছরে কয়েক বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

মঙ্গলবার কিউবার কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, তারা অস্থিরতা সৃষ্টি, ভাঙচুর, করোনাভাইরাস নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো ও মারধরের অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। প্রতিটি অভিযোগে সর্বোচ্চ ২০ বছর পর্যন্ত জেলের বিধান রয়েছে কিউবায়।

কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল ডিয়াজ-কানেল গত সপ্তাহে জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেলে প্রতিশ্রুতি দেন, গ্রেপ্তারকৃতরা সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবেন।

মানবাধিকার সংস্থা কিউবালেক্স ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের বেশিরভাগকেই কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হচ্ছে না এবং তাদের অনেকের অবস্থান অজানা।

কিউবার জনগণ একটি ফেসবুক পেজে নিখোঁজ ব্যক্তিদের ছবি ও হাজতবাসের অভিজ্ঞতা নিয়ে পোস্ট করছেন। 'ডিসঅ্যাপিয়ার্ড#এসওএসকিউবা' নামের গ্রুপটিতে সদস্য সংখ্যা বর্তমানে ১০ হাজার ছাড়িয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Palak admits shutting down internet deliberately on Hasina's order

His testimony was recorded by the International Crime Tribunal's investigation agency following a questioning session held yesterday

17m ago