‘আমরা ভাসতে চাই না, বাঁচতে চাই’

আম্পানের ১ বছর, উপকূলবাসীর ‘জলবায়ু অবরোধ’
1.jpg
নৌকার ওপর ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে ‘জলবায়ু অবরোধ’ কর্মসূচি পালন করেছে উপকূলবাসী। ছবি: স্টার

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের এক বছর পার হলেও ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি খুলনা ও সাতক্ষীরা উপকূলীয় এলাকার কয়েক লাখ মানুষ।

দীর্ঘ সাত-আট মাস বিস্তীর্ণ এলাকা লবণ পানিতে ডুবে থাকায় এখন সেখানে কৃষি কাজ হচ্ছে না। আম্পান এবং করোনা এই অঞ্চলের মানুষকে দুর্বিষহ অবস্থায় ফেলেছে।

বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনের আতঙ্কে স্থানীয়দের তটস্থ থাকতে হয় সবসময়। অনেক এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনো বিচ্ছিন্ন। চিকিৎসা, স্যানিটেশন, সুপেয় পানিসহ বিভিন্ন সংকটে বিপর্যস্ত উপকূলের লক্ষাধিক মানুষ।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় সুপার সাইক্লোন আম্পানের এক বছর উপলক্ষে দ্রুত বেড়িবাঁধ সংস্কার, সুপেয় পানি ও উপকূল সুরক্ষার দাবিতে সাতক্ষীরার শ্যামনগরের চৌদ্দরশি ব্রিজ ও নৌকার ওপর ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে ‘জলবায়ু অবরোধ’ কর্মসূচি পালন করেছে উপকূলবাসী।

ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস, বাংলাদেশে মডেল ইয়ুথ পার্লামেন্ট ও কোস্টাল ইয়ুথ অ্যাকশন হাব’র ব্যানারে এবং স্থানীয় গাবুরা আইডিয়াল ক্লাব, সানমুন স্টার সোশ্যাল ক্লাব, ম্যানগ্রোভ স্টুডেন্ট সোসাইটি ও স্টুডেন্ট কেয়ার সোসাইটির উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

সমাবেশ থেকে জলবায়ু সুবিচার ও উপকূলবাসীর স্বার্থ সুরক্ষায় অতিদ্রুত ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কার ও সুপেয় পানি সরবরাহের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, দুর্যোগের সময় কর্তৃপক্ষ ও মিডিয়া তৎপর থাকে। আমরা আশ্বাস পাই, কিন্তু বাস্তবায়ন হয় না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সেই তৎপরতা আর থাকে না। স্বাভাবিক সময়েও যে উপকূলের মানুষের জীবন কতোটা অস্বাভাবিক থাকে, এটা কেউ দেখে না। আজ আম্পানের দীর্ঘ এক বছর পরও উপকূলের শতাধিক ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে আছে। বার বার বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় সবসময় আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে স্থানীয়দের। আমরা ভাসতে চাই না, বাঁচতে চাই।

2.jpg
চিকিৎসা, স্যানিটেশন, সুপেয় পানিসহ বিভিন্ন সংকটে বিপর্যস্ত উপকূলের লক্ষাধিক মানুষ। ছবি: স্টার

ম্যানগ্রোভ স্টুডেন্ট সোসাইটির সাবেক সভাপতি ইয়াসির আরাফাতের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন স্টুডেন্ট কেয়ার সোসাইটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ইসরাফিল হুসাইন, ইনফরমেশন কোয়েস্ট সেন্টারের সভাপতি তাসনিমুল এহসান ফাহাদ, সানমুন স্টার সোশ্যাল ক্লাবের মুতাছিম বিল্লাহ, ম্যানগ্রোভ স্টুডেন্ট সোসাইটির সভাপতি আরিফুল ইসলাম, ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের সাতক্ষীরা জেলা সমন্বয়ক এসএম শাহিন আলম, রাইসুল ইসলাম, তানভীর আহমেদ, ডিকে শরিফুল ইসলাম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুহতারাম বিল্লাহ প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয় গোটা সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকা। পানিবন্দী হয়ে পড়েন উপকূলীয় এলাকার ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ। ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয় দুই হাজারেরও বেশি। এখনো ডুবে আছে শতাধিক ঘর-বাড়ি। কাজ না থাকায় সেখানকার লোকজন বর্তমানে বেকার হয়ে পড়েছেন। আম্পানের এক বছর পার হলেও উপকূলীয় এলাকায় গৃহহীনের সংখ্যা এখনো দুই শতাধিক। বেড়িবাঁধের রাস্তার ওপর অস্থায়ী খুপরি ঘরে তাদের বাস।

Comments

The Daily Star  | English

Battery-run rickshaws allowed back on Dhaka roads for one month

SC chamber judge issues status quo on HC order

3h ago